স্ত্রীকে কাজ দিতে প্রিন্স হ্যারির অনুরোধ

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

ব্রিটিশ রাজপরিবার ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন প্রিন্স হ্যারি ও তা স্ত্রী মেগান মার্কেল। এরই মধ্যে ঘোষণা এসেছে, রাজকীয় পদবিও আর ব্যবহার করবেন না তারা। এমনকি রাজপরিবারের হয়ে দায়িত্ব পালনের জন্য যে অর্থ পেতেন, সেটাও বন্ধ।

এমন পরিস্থিতির জন্য অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এ দম্পতি। সম্প্রতি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

রোববার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানায়, ডাচেস অব সাসেক্স থাকাকালেই গত জুলাইয়ে লন্ডনে ডিজনির জনপ্রিয় লাইভ-অ্যাকশন মুভি ‘দ্য লায়ন কিং’-এর প্রিমিয়ারে উপস্থিত হয়েছিলেন হ্যারি-মেগান। সেখানেই ডিজনির সিইও বব আইগারের কাছে স্ত্রীকে কাজ দিতে কৌশলে অনুরোধ করেন ব্রিটিশ রাজপুত্র।

দাতব্য সংস্থা ‘এলিফ্যান্ট উইদাউট বর্ডার’- এ অনুদান দেয়ার বিনিময়ে ডিজনির একটি প্রকল্পে মেগানকে কাজ দেয়ার মাত্র মাসখানেক আগেই এ ঘটনা ঘটে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, নির্মাতা জন ফ্যাভ্রু, পপতারকা বিয়ন্সে ও তার স্বামী র্যাপতারকা জে-জির সঙ্গে দাঁড়িয়ে আলাপ করছেন প্রিন্স হ্যারি ও মেগান। এ সময় হ্যারি বলেন, ‘যদি কারও আরও নেপথ্যকণ্ঠের (ভয়েস আর্টিস্ট) কাজ দরকার হয়…’। তার কথার মধ্যেই মেগান বলে ওঠেন, ‘তাহলে আমরা আছি।’ হ্যারি বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমরা এর জন্যই এখানে এসেছি।’

মজা করে হ্যারি এ সময় বলেন, ‘শুধু স্কার নয়।’ স্কার হচ্ছে লায়ন কিং সিনেমার খলচরিত্র, যে সিমবার কাছ থেকে তার রাজ্য কেড়ে নিতে চায়।

আরেকটি ফুটেজে দেখা যায়, হ্যারি-মেগান বিয়ন্সেদের সঙ্গে আলাপকালে পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন ডিজনির সিইও বব আইগার ও তার স্ত্রী সাবেক টিভি উপস্থাপিকা ইউলো বে। এ সময় হ্যারি কী বলছিলেন স্বামীর কাছে তা জানতে চান উইলো।

আইগার বলেন, ‘হ্যারি বলেছেন, তুমি কি জানো সে-ও (মেগান) কণ্ঠ দেয়?’ এ কথায় অবাক ডিজনি বস সঙ্গে সঙ্গেই বলেন, ‘সত্যি নাকি? জানতাম না তো!’

উত্তরে হ্যারি বলেন, ‘সে (মেগান) সত্যিই আগ্রহী।’ এটি শুনে হ্যারিকে আশ্বাস দেন বব আইগার। বলেন, ‘আমরা ভালোভাবেই চেষ্টা করব।’

 

স্বামীর কাছে এসব কথাবার্তা শুনে আইগারপত্নী কী বলেছেন তা পরিষ্কার না হলেও তার মুখভঙ্গিই বলে দেয়, চরমমাত্রায় অবাক হয়েছেন তিনি।

এদিকে, ব্যক্তিগত ইমেজের কারণে কাজ পেতে হ্যারি-মেগানের যে খুব একটা কষ্ট করতে হবে না, তা বোঝাই যাচ্ছে। গতকাল শনিবার রাতে নেটফ্লিক্সের চিফ কন্টেন্ট অফিসার টেড সারান্দোস জানিয়েছেন, হ্যারি-মেগান চাইলে তাদের সঙ্গেও কাজ করতে পারেন।

লস অ্যাঞ্জেলসে একটি অনুষ্ঠানে টেডকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তারা হ্যারি-মেগানের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী কি-না? জবাবে তিনি বলেন, ‘কে আগ্রহী হবে না? অবশ্যই, হ্যাঁ!’

তবে হ্যারি-মেগানের এভাবে রাজপরিবার ছেড়ে যাওয়া সবাই যে ভালো চোখে দেখছেন, তা কিন্তু নয়। গত সপ্তাহে কানাডিয়ান লেখক ও ভাষ্যকর মার্ক স্টেইন এটিকে রাজপরিবারের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ‘অধঃপতন’ বলে মন্তব্য করেন।

তিনি ফক্স নিউজকে বলেন, ‘গত ১০০ বছরের মধ্যে রাজতন্ত্রের এটিই সবচেয়ে বড় অধঃপতন। আমি মনে করি, ডিউক অফ উইন্ডসর সিংহাসন ত্যাগের পর ধনী আমেরিকানদের বিনোদন দেয়ার সময় এবং রাজকীয় জীবনের একধরনের কৃত্রিম ঝলক দেয়ার পর তিনি যেসব তুচ্ছ কাজ করেছিলেন… তার কোনোটাই আসলে নিজের স্ত্রীকে লায়ন কিং ৭ বা যা-ই হোক তার জন্য লেলিয়ে দেয়ার মতো নয়।’

যদিও অসংখ্য ভক্ত-সমর্থক স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার চেষ্টা করায় হ্যারি-মেগানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বাজফিডের সাংবাদিক মারিসা জি মুলার লিখেছেন, ‘তার (মেগান) জন্য হ্যারির ভালোবাসা অগ্রাহ্য করার মতো নয়… (সে) সঙ্গী হিসেবে যতটা সহায়ক হতে হয়, ঠিক তেমনই।’

শোনা যাচ্ছে, এরই মধ্যে হলিউডে মেগান মার্কেলের এজেন্ট টিম ও প্রকাশকরা তার ভবিষ্যৎ শোবিজ ব্যবসা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন। আর অ্যাপল টিভি প্লাসে অপ্রাহ উইনফ্রের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে ছয় পর্বের একটি অনুষ্ঠান করতে চুক্তি করেছেন হ্যারি।