ইরানের পারমাণবিক চুক্তি বাঁচাতে চায় জার্মানি

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইরানের ক্ষমতাধর জেনারেল সোলেইমানি নিহত হওয়ার পর তেহরান ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় জাতির সঙ্গে করা পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ইরানের এমন ঘোষণা আসার পর চুক্তিটি বাঁচিয়ে রাখার ইচ্ছার কথা জানিয়েছে চুক্তির অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ জার্মানি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল সোমবার রাতে পারমাণবিক চুক্তি আর মানবে না জানিয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে যে ঘোষণা দিয়েছে ইরান তার পরিপ্রেক্ষিতে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন যুগান্তকারী ওই চুক্তি বাঁচিয়ে রাখতে চায় তারা।

সরকারের এক রুটিন সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র বলেন, ‘এটা জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) চুক্তির আরও লঙ্ঘন হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে চুক্তির সমাপ্তির বিষয়টি আমি জোর দিয়ে বলতে চাই। চুক্তিটি বাঁচিয়ে রাখা এখনো আমাদের লক্ষ্য। আমরা সে বিষয়েই আলোচনা করছি।’

এর আগে জার্মান চ্যান্সেলর আঞ্জেলা মেরকেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রোববার এক যৌথ বিবৃতি ইরানকে তাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উত্তেজনা প্রশমন ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত।’

২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ক্ষমতায় থাকার সময় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে এই পারমাণবিক চুক্তিটি হয় ইরানের। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ২০১৮ সোলে আলোচিত পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। তারপর থেকে তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনা চলছে।

ট্রাম্প শুধু চুক্তি থেকে তার দেশকে প্রত্যাহার করেই ক্ষান্ত হননি তিনি ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা ছাড়াও আরও নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। সর্বশেষ গত শুক্রবার ইরাকে ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যা করা হলে তেহরান চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সীমিত রাখবে এবং যে কোনো স্থাপনায় যে কোনো সময় আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিনিধিদের পরিদর্শন করতে দেবে। চুক্তির পর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর থেকে দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়। কিন্তু ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, ইরান চুক্তি মানছে না।