বরিশালের উজিরপুরে মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রীকে ভাতার টাকা উত্তেলনের সহয়াতা করার নাম করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নাটকীয় ভাবে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে নগদ ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা আয়নাল হক হাওলাদার,
(৫৫)। প্রতারনার স্বীকার হয়ে প্রায়ত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী কহিনুর বেগম(৪৫) প্রতারক আয়নাল হেসেনের বিচার চেয়ে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে ১৭ ডিসেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ভূক্তভোগী কোহিনুর বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আয়নাল আমাকে নিঃস্ব করে সবকিছু লুটে নিয়েছে, আমি এখন দিশেহারা, আমার মরণ ছাড়া কোন উপায় নেই ওর মত দুচরিত্র লোকরা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানহানী করছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন,তার স্বামী উজিরপুর উপজেলার দক্ষিণ মোড়াকাঠী গ্রামের বাসিন্দা আ: রশিদ খান, একজন গেজেট ভুক্ত মুক্তিযোদ্বা সে মারা যাওয়ার পর তার নামের সম্মানী ভাতার টাকা উত্তোলনের কাজে উজিরপুর মুক্তিযোদ্বা কাউন্সিলে দক্ষিন মোড়াকাঠী গ্রামের মূত্যু সফিজ উদ্দিনের পুত্র মুক্তিযোদ্বা আয়নাল হাওলাদারের সাথে পরিচয় ঘটে প্রায় ১০ বছর আগে সে (আয়নাল হাওলাদার)
তার স্বামীর নামের ভাতার টাকা উত্তালোনে সহয়াতার কথা বলে তার (কহিনুর বেগমের) সাথে সুসম্পার্ক গড়ে তুলে এক পর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় বিয়েতে রাজি না হওয়ায় তার স্বামীর সম্মানী ভাতার টাকা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে আয়নাল হাওলাদার কহিনুর বেগমকে কোরান শপথ করে বিয়ে করে বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী স্ত্রী হিসাবে বসবাস শুরু করে। উভায় পরিবারের মধ্যে বিয়ের কথা
জানাজানি হলে নিজের সম্মান রক্ষায় এক পর্যায়ে তাকে বিদেশ যাওয়ার জন্য নানা ভাবে পরামর্শ দেয় আয়নাল হক। কহিনুর তার কথা মতো দুবাই গিয়ে দেশে ফিরে আসলে তার (কহিনুরের) উপার্জনের প্রায় ১০ লাখ টাকা জমি ক্রয়ের নাম করে হাতিয়ে নেয়। পরবর্তিতে মুক্তিযোদ্বা তাহবিলের লোন করা ৩ লাখ টাকাও কৌশল করে কহিনুরের কাছ থেকে নিয়ে যায় আয়নাল হাওলাদার।
একপর্যায়ে প্রতারক আয়নাল আরো একলাখ টাকা দাবী করে তার দাবীকৃত টাকা কহিনুর দিতে না পারায় তাকে নানা ভাবে হুমকি দেয়। শেষ পর্যায়ে অসহায় কহিনুর বেগম বুঝতে পারে আয়নাল তার সরলতার সুযোগ নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য তার সাথে প্রতারনার করেছে।
অভিযুক্ত আয়নালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেন, তার কারনে স্বামীর ভাতার টাকা কহিনুর উত্তলোন করতে পারেছে। তিনি তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের কিছুটা সত্য বলে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে আয়নাল হক তাদের বিয়ের কথা অস্বীকার করলেও কতিপয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, কোহিনুর বেগমকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে গৌরনদী ও বাবুগঞ্জে বাসা ভাড়া নিয়ে একত্রে বসবাস করেছে। এমনকি আয়নাল হকের সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন সময়ে বেড়াতে যেত।
এ ছাড়াও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর কন্যা বাবুগঞ্জের ভাড়া বাসায় নিয়ে বিবাহ অনুষ্ঠান করেন। সেখানে উজিরপুর উপজেলার একাধিক মুক্তিযোদ্ধা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। এতদিন স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তারা বসবাস করেও কিভাবে বিবাহের কথা অস্বীকার করে-প্রশ্ন রাখেন এলাকাবাসী। উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণতি বিশ্বাস বলেন, তিনি এ সংক্রান্ত বিষয়ে এক নারীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।