জিয়া উদ্দিন বাবু :: বরিশাল কোতয়ালী থানার সাবেক এস আই চিন্ময় মিত্রসহ ৩ জনকে মাদক মামলায় সাজা দিয়েছে আদালত। সোমবার (২১ অক্টোবর) বরিশালের ১ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এম এ হামিদ বিচারাধীন আদালত চিন্ময়ের উপস্থিতিতে সাজার রায় দেন। রায়ে এস আই চিন্ময় মিস্ত্রিকে ৫ বছর কারাদণ্ডসহ ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ড এবং তার সহযোগী মাদক ব্যবসায়ী নিধু মিস্ত্রি ও রুবেলকে ৩ বছর করে কারাদন্ডসহ ৩ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আদালত সূত্র জানায়,২০১৬ সালের ২৪ জুলাই বিমান বন্দর থানার এস আই সুলতান আহম্মেদ মাদক বিক্রেতা নিধু মিত্রসহ ৪৮ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, মাদক বিক্রির খবর পেয়ে কোতয়ালী মডেল থানার এস আই সমীরণ মন্ডলসহ দুই থানা পুলিশ ইনফ্রা পলিটেকনিক কলেজের উত্তর পাশে অভিযান চালিয়ে সিগারেটের কার্টুনে রাখা ৪৮ বোতল ফেন্সিডিলসহ নিধুকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে নিধু থানা পুলিশকে জানায় সে ১০ হাজার টাকা মাসিক বেতনে এসআই চিন্ময় মিত্রের মাদক বিক্রি করে। এস আই চিন্ময় ও বেল্লাল গাজী তাকে ৩০০ বোতল ফেন্সিডিল বিক্রি করতে দেয়। নিধু ও রুবেল হোসেন ব্যাপারী এবং কামাল ওরফে মাইজ্জা কামাল বরিশাল নগরীজুড়ে ওই মাদক বিক্রি করে।
তারা চিন্ময় ও বেল্লালের নির্দেশ মত টাকা এস এ পরিবহণ ও বিকাশের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে পাঠায়। এভাবে নিধু থানা পুলিশ ও আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়। মামলাটি তদন্তের জন্য থানা পুলিশ ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়। ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল ইসলাম রুবেল ও বেল্লালকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে একই ধরনের তথ্য পায়। তিনি ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর চিন্ময় মিত্রসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন।
আদালত ২২ ডিসেম্বর চার্জশিট গ্রহন করে পলাতক অভিযুক্ত কামাল ও চিন্ময়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আদালতের আদেশ পেয়ে চিন্ময় নিজেকে নির্দোষ দাবী করে গত ১৯ জুন জামিনের আবেদন জানিয়ে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শামীম আহম্মেদ বিচারাধীন আদালতে আত্নসমর্পন করে হাজতে যায়। কিছুদিন হাজতবাস শেষে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে জামিন লাভ করে। মামলাটি বিচারের জন্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করেন। এস আই চিন্ময়সহ তিনজন মামলা হতে অব্যাহতি চেয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বুধবার জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন বিচারাধীন আদালত আবেদন না মঞ্জুর করে ৫ জনের বিরুদ্ধে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ১৯(১)এর টেবিল ৩(খ)/২৫ ধারায় চার্জ গঠন করে বিচারের জন্য সাক্ষী তলব করেন। মামলাটি বিচারের জন্য অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বদলী করা হয়।
ওই আদালত ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দোষী সাব্যস্ত হলে চিন্ময়, নিধু ও রুবেলকে সাজা এবং বেল্লাল ও মাইজ্জা কামালের দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেন। রায়ের সময় চিন্ময় ও নিধু উপস্থিত ছিল। রায় শেষে তাদের দুজনকে সাজাভোগে পুলিশ প্রহরায় বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয় এবং রুবেল পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।