নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল। বর্তমান সময়ে শেবাচিমের সেবার মান দিন দিন অবনতি হচ্ছে। ডাক্তারদের অবহেলায় নানান সময়ে প্রতারিত হয়ে কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে প্রাইভেট হসপিটালের দারস্থ হচ্ছেন রোগীরা। ফলে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।
চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেন, ২২ ই আগষ্ট বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে তাদের শিশু কন্যার গলায় প্লাস্টিকের একটি চাকতি আটকে গেলে তাকে নিয়ে শেবাচিমের জরুরী বিভাগে আসলে তাকে নাক কান গলা ইউনিটে পাঠানো হয়। কিন্তু ১ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও দেখা মেলেনি কোন অভিজ্ঞ ডাক্তারের।শিশুর অবস্থা অবনতি হলে সেখানে উপস্থিত মিরন নামের এক ইন্টার্নি চিকিৎসক তাদের অভিজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ মামুনকে ফোনদিলে তিনি মেডিকেলে না এসে রোগীকে ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।এ সময়ে শিশুর করুন অবস্থায় পেরেশান রোগীর স্বজনরা কান্নাকাটি শুরু করে দেয় এবং কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে উপস্থিত ইন্টার্নি ডাক্তার মিরনকে অভিজ্ঞ ডাক্তার নেই কেন জিজ্ঞাসা করলে রোগীর স্বজনদের উপর চরাও হয়ে মারধরের জন্য উদ্ধত হয়।এ সময়ে উপস্থিত অন্যান্য রোগীদের স্বজনরা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনে।পরে এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টাের ডাক্তার গোলাম সগীরের সহায়তায় চাকতি বের করা হয়।
এ বিষয়ে রোগীর চাচা আল আমিন বলেন,বাহিরেই যদি চিকিৎসা করাতে হয় তাহলে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে লাভ কি।শেবাচিমে সেবার মান খুবই ই খারাপ।ডাক্তারদের এমন অবহেলায় রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। তাই দ্রুত ডাক্তারদের উপর নজরদারি বাড়ানোর জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এর আগে ২১ আগষ্ট দুপুরে আয়াদের ঘুষ না দেয়ায় এক গর্ভবতী মহিলাকে ইচ্ছাকৃত দেড় ঘন্টা বসিয়ে রেখে ওটিতে না নেয়ায় নবজাতকের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে এই ঘটনায় উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পুলিশ একজন আয়াকে গ্রেফতার করলেও বাকিদের ব্যবহার আরো নিকৃষ্টতর হয়েছে বলে জানান সেবা নিতে আসা অন্যান্যরোগীর স্বজনরা।
সূত্র জানায় দালাল এর কারনে প্রায়ই ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে সাধারণ রোগীদেরকে। বরিশাল র্যাবের অভিযানে কিছু দালাল চক্র আটক হলেও ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে আরো বেশকিছু চক্র। এছাড়াও নিন্মমানের আসবাবপত্র ও নোংরা পরিবেশেই সেবা দেয়া হচ্ছে রোগীদের।
সৌদী প্রবাসী চুন্নু আকন জানান বিদেশে থাকাকালীন সময়ে আমরা প্রায় হাসপাতালের মধ্যে গিয়ে বিশ্রাম নিতাম কি সুন্দর পরিবেশ আর বরিশালে এসে আমার এক ভাইকে নিয়ে শেরেবাংলায় গিয়েছিলাম,টয়লেটে গিয়ে আমি বমি ই করে দিয়েছিলাম।এতটা নোংরা পরিবেশ যদি কোন হাসপাতালের হয় সেখানে মানুষ কিভাবে সুস্থ হবে তা বুঝিনা।
এ ব্যাপারে শেবাচিম পরিচালক ডাঃ মোঃ বাকির হোসেন জানান,আমি অভিযোগ সম্পর্কে অবহিত হয়েছি বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।