খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তির বিষয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। শনিবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য ও তার মুক্তির বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেসব গণতান্ত্রিক দেশ আছে তাদের অবহিত করবো এবং অন্যায়ভাবে দেশনেত্রীকে আটক করে রাখা হয়েছে সে বিষয়টা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন, ঈদের আগে দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়টা এসেছিল। কিন্তু হাইকোর্টে একটা নেতিবাচক আদেশ হওয়ার পর থেকে আমাদের ধারণাটা আরও দৃঢ় হয়েছে যে, বিচারব্যবস্থা আর স্বাধীনভাবে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না। সরকার বিচারব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।’
ফখরুল বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে আইনিভাবে এটা কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে যে, এখানে আমরা ন্যায়বিচার পাবো কিনা। সে কারণে দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য বিভাগীয় পর্যায়ের সমাবেশের কর্মসূচি অব্যাহত রাখবো। যেহেতু আগস্ট মাসে সরকার কোনো কর্মসূচি নিতে দেয় না সে কারণে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এ কর্মসূচি আবার শুরু করবো।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঈদের আগে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশ করেছে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ডেঙ্গু পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও ভয়াবহ। সবাই বলছেন যে, আগামী মাস নাকি আরও খারাপ যাবে, অবস্থা আরও বাড়বে। দুর্ভাগ্যের বিষয়টা হচ্ছে যে, এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর ওষুধ এসে পৌঁছেনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা গত সভা থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে অনুরোধ করেছিলাম যে, এটার প্রতিরোধে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে, সেটা সরকার করেনি, আপদকালীন একটা ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলাম সেটাও নেয়া হয়নি। ফলে যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন তারা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। আমরা সম্পূর্ণ বিনা খরচে চিকিৎসা দিতে সব রকমের ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
কোরবানির চামড়া নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটের তৎপরতা এবং সরকারে ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চামড়া শিল্প ধ্বংসের জন্য এ সব কাজ করেছে। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সরকারের ব্যর্থতা ও উদাসীনতার জন্য তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। আমরা অবিলম্বে এ শিল্পকে রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে র্যালি, সভা-সমাবেশ, আলোচনা সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা র্যালি ও পরদিন আলোচনা সভা করব। এর পরই বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশ করা হবে।
দুই ঘণ্টার বৈঠকে মহাসচিব ছাড়া খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া লন্ডন থেকে স্কাইপে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৈঠকে যুক্ত ছিলেন।