যৌতুকের দাবিতে সীমাকে নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছে- এমন অভিযোগে তার মা একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এক বৈঠকে স্বামী সাইফুল ইসলামকে জরিমানাও করা হয় দুই লাখ টাকা। টাকা দিতে পারেননি সাইফুল। একদিকে স্ত্রী উধাও, অন্যদিকে নানা হয়রানী সইতে না পেরে গত ২১ জুলাই তিনি আত্মহত্যা করেন। এদিকে মামলা দায়েরের ৭৬ দিন পর গত মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) রাতে সীমা আক্তারকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার বিকেলে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন জীবিত উদ্ধার হওয়া সাইফুলের স্ত্রী সীমা আক্তার। বৃহস্পতিবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম। সাইফুলের পরিবার, থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চার বছর আগে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের নাল্লা গ্রামের মোরশেদ মিয়ার মেয়ে সীমা আক্তারের বিয়ে হয়। স্বামী একই উপজেলার ব্রাহ্মণপাড়া সদরের আটকিল্লাপাড়ার সহিদুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিলো।
গত মে মাসের ১৮ তারিখ থেকে সীমা আক্তারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ নিয়ে ২৩ মে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে সীমা আক্তারের মা হেলেনা বেগম বাদি হয়ে মেয়েকে খুন করে গুম করা হয়েছে এমন অভিযোগে সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার পর থেকে সাইফুল পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।
এদিকে ঘটনাটি মিমাংসার জন্য সাইফুল ও সীমার পরিবারের লোকজন একাধিকবার বৈঠকও করেছিলেন। একটি বৈঠকে সাইফুলকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। কিন্তু সাইফুল সেই টাকা দিতে পারেননি। এদিকে স্ত্রী উধাও, অন্য দিকে হত্যা ও লাশ গুমের মামলা। সেই চিন্তায় গত ২১ জুলাই সাইফুল ইসলাম গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ নিয়ে সাইফুলের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন।
এরই মধ্যে ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে। গোপনে খবর পেয়ে পুলিশ সীমা আক্তারকে গত মঙ্গলবার রাতে ব্রাহ্মণপাড়া এলাকা থেকে জীবিত উদ্ধার করে এবং বুধবার কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে প্রেরণ করে। ওই আদালতে সীমা আক্তার জবানবন্দি দিয়েছেন।
তিনি আদালতকে বলেন, সাইফুল তাকে নির্যাতন করতেন। এ কারণে কাউকে কিছু না জানিয়ে গাজীপুরে গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি করেছেন। বাড়িতে আসলে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে আসেন।