টেবিলে টেবিলে ঘুষ আর বকশিশ, চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

বরিশাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছেন পরিষদের সদস্যরা।

বুধবার দুপুরে চেয়ারম্যান মইদুল ইসলামের কক্ষের সামনের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন ১৫ পুরুষ এবং তিন নারী সদস্য। এ সময় তারা মইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন। তার অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে ১৯ দফা প্রস্তাব অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা। দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন সদস্যরা।

জেলা পরিষদের সদস্য মানওয়ারুল ইসলাম অলি জানান, চেয়ারম্যান মইদুল ইসলামের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। তার একক সিদ্ধান্তে জেলা পরিষদের কার্যক্রম চালানো হয়। সদস্যরা প্রতিবাদ করলে তাদের হামলা-মামলার ভয় দেখানো হয়। এসব কারণে পরিষদের সদস্যরা বুধবার প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হয়েছেন। পাশাপাশি ১৯ দফা প্রস্তাব অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।

তাদের দাবিগুলো হলো- উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ৭ ভাগ হারে ঘুষগ্রহণ ও টেবিলে টেবিলে ঘুষ ও বকশিশ প্রথা বন্ধ করতে হবে। ঘুষ ও বকশিশমুক্ত জেলা পরিষদ ঘোষণা করতে হবে। ২০১৯-২০ সালে রাজস্বের ক্ষতি করে পরিষদের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তে মীরগঞ্জ খেয়াঘাটে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান ও বেদখল হওয়া মেহেন্দিগঞ্জ খেয়াঘাট উদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রাজস্বের এক কোটি ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রাজস্বের দুই কোটি টাকা যা সদস্যদের অগোচরে চেয়ারম্যান এককভাবে প্রকল্প গ্রহণ করেন। এই অর্থ আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরে সদস্যদের মাঝে বণ্টন করতে হবে। পাশাপাশি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রিভাইস বাজেটের ছয় লাখ টাকার প্রকল্প যেসব সদস্য থেকে এখনো নেয়া হয়নি তা গ্রহণ, সুষম উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে সদস্য প্রতি চার ভাগ হারে সব বরাদ্দের প্রকল্প প্রদান, চেয়ারম্যান তিন কর্মদিবস অফিসে অনুপস্থিতিতে প্যানেল চেয়ারম্যানকে দায়ত্বি দেয়া, সাত কর্মদিবস অনুপস্থিতিতে প্যানেল চেয়ারম্যানকে আর্থিক ক্ষমতা হস্তান্তর, নিয়মবহির্ভূতভাবে জেলা পরিষদের মার্কেটের লিজ দেয়া বাথরুমগুলো পুনরুদ্ধার ও পরিষদের অনুমোদনহীন সব জমি ও মার্কেটের লিজ বাতিল করা এবং জেলা পরিষদের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পূর্ণ তালিকার কপি সব সদস্যদের মাঝে বণ্টন করতে হবে। এছাড়া জেলা পরিষদের ডাকবাংলার অনিয়ম দূর করে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে।

এ ব্যাপারে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, ১৫ জন পুরুষ এবং তিনজন নারী সদস্য ১৯ দফা প্রস্তাবনার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। চেয়ারম্যান মইদুল ইসলামের কক্ষের সামনে ও জেলা পরিষদের অফিসিয়াল বোর্ডে ১৯ দফা দাবি টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। এ প্রস্তাবনা পাস না হওয়া পর্যন্ত তালা খুলে দেয়া হবে না। অবিলম্বে দাবি বস্তবায়ন না হলে উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দায়ী থাকবেন।

এদিকে, গত কয়েকদিন ধরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মইদুল ইসলাম ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও রিসিভ করেননি।