দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের প্রধান পথ হচ্ছে নৌ পথ। কিন্তু এই নৌ পথের বিভিন্ন রুটে বর্তমানে লঞ্চ চলাচল করছে না। আবার সড়কপথের উন্নয়নের ফলে নদীপথে যাত্রী কমছে।
পদ্মাসেতু ও ভোলা-বরিশাল ব্রিজ হলে বর্তমানে সচল আরও বিভিন্ন নৌরুটে ভাটি পড়তে পারে বলে মনে করেন অনেকেই।
ব্রিটিশ আমলে বরিশাল থেকে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল নৌপথ। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরও এ অঞ্চলে অর্ধশতাধিক নৌপথ চালু ছিল। তবে ১৯৯০ সালের পর থেকেই নাব্য সংকটে নৌপথ বন্ধ হতে থাকে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছরে এ অঞ্চলে ১৩টি নৌপথ বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে সচল রয়েছে মাত্র ২১ টি। এর মধ্যে ১৫ টি রুটে লঞ্চ চলাচল সচল আছে , ৩টি রুটে ভায়া লঞ্চ চলাচল করে এবং ৩টি রুটে স্টিমার চলাচল করলেও সেখানে লঞ্চ চলাচল করে না। এছাড়াও বরিশাল থেকে নৌপথে ১৩টি রুট বন্ধ আছে ।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বরিশাল থেকে ঢাকা, ভোলা, পাতারহাট, মজুচৌধুরীর হাট(লক্ষীপুর), হিজলা, উলানিয়া -কালীগঞ্জ, লালমোহন, চরকলমী, কালাইয়া/নুরাইনপুর , বোরহানউদ্দিন, বরগুনা , হিজলা ,আমতলী, ভান্ডারিয়া, চরবিশ্বাস/চরমোন্তাজ, বাঘেরহাট (মোড়লগঞ্জ) , কাউখালী, হুলারহাট, বরিশাল-ঢাকা ভায়া নন্দীর বাজার,বরিশাল-লেতরা ভায়া কালাইয়া,বরিশাল ভায়া চাদপুর এ সকল নৌ পথ সচল আছে।
এছাড়া বরিশাল থেকে খেপুপাড়া, মহিপুর , গলাচিপা ,পাথরঘাটা, চরদুয়ানী , স্বরূপকাঠী, পটুয়াখালী, বরিশাল থেকে খুলনা ভায়া মংলা ,আমুল, ইন্দুরকানী, তালতলী, ঘোষের হাট, কাঠালিয়া এই ১৩টি রুটে নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব সুলতান মাহমুদ আজকের বার্তাকে বলেন,অনেক রুট বন্ধ হয়ে গেছে এবং সচল অনেক রুট বন্ধ হওয়ার প্রায় উপক্রম। পদ্মাসেতু ও ভোলা-বরিশাল ব্রিজ অনেক রুটেই ভাটি পড়বে। লোকাল লাইনের অনেক লঞ্চ রুট বন্ধ হবার সাথে সাথে বিলুপ্তির পথে পৌঁছবে।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আজমুল হুদা মিঠু সরকার বলেন, নৌপথে যাত্রা সাধারনত যাত্রীদের কাছে নিরাপদ এবং আরামদায়ক। পদ্মাসেতু ও ভোলা-বরিশাল ব্রিজ হলেও যাত্রীরা সাশ্রয়ী মূল্যে ভ্রমনের জন্য নৌ পথকেই বেছে নিবে। এতে তেমন কোন রুট বন্ধ হবার সম্ভাবনা নেই। এছাড়া পদ্মাসেতু ও ভোলা-বরিশাল ব্রিজ হলে ব্রিজে মালবাহী যানবাহন বৃদ্ধি পাবে। সেক্ষেত্রে যাত্রীরা নৌ পথকেই বেশি গুরুত্ব দিবে।