 
                                            
                                                                                            
                                        
বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি চাকরিজীবীদের আয়কর দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একই সঙ্গে ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রকাশ ও নজরদারি বাড়িয়েছে রাজস্ব প্রশাসনের শীর্ষ এ সংস্থা। ফলে বাংলাদেশে কর্মরত সব বিদেশি চাকরিজীবীদের এখন থেকে আয়কর দিতে হবে।
এনবিআর বলছে, যথা সময়ে যথাযথভাবে কর না দিলে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান বা ওই বিদেশি নাগরিককে শাস্তি দেওয়ারও ব্যবস্থা আছে। আয়কর আইনে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ৫ লাখ বা প্রদেয় করের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রয়েছে। এ ছাড়া তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বিদেশি নাগরিকদের আয়ের ওপর কর হার ৩০ শতাংশ। কোনো বিদেশি ১০০ টাকা আয় করলে ৩০ টাকা কর দিতে হবে। চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান প্রতি মাসে বেতন-ভাতা দেওয়ার সময় তা কেটে রাখবে। বিদেশিদের আয়ের ওপর কর পুরোটাই উৎসে কেটে রাখতে হবে।
এনবিআরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেসব কোম্পানি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, হোটেল, রেস্তোরাঁয় বিদেশি নাগরিক কাজ করেন কিংবা অদূর ভবিষ্যতে কাজ করার সম্ভাবনা আছে -সেই সব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে বিদেশি নাগরিক নিয়োগের ক্ষেত্রে আয়কর বিধিমালা অনুসরণ করতে হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে কতজন বিদেশি নাগরিক কাজ করছেন তার সঠিক কোনো তথ্য নেই। সম্প্রতি এনবিআরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের তথ্য, বেতনকাঠামো জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত এমন ২৮৬টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য পেয়েছে এনবিআর।
দেশের বায়িং হাউস, বস্ত্র, প্রযুক্তি, সেবা খাতে বিদেশিরা কাজ করেন। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশে কর্মরত এসব বিদেশিরা প্রকৃত আয় গোপন করে কর ফাঁকি দিচ্ছেন।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর গড়ে ১১ হাজার বিদেশি নাগরিকের কাছ থেকে আয়কর পায় এনবিআর। কিন্তু বাস্তবে এর অনেক বেশি নাগরিক বাংলাদেশে কাজ করছেন। তাদের মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা রয়েছেন। অনেকে আবার পর্যটক ভিসায় বাংলাদেশে এসে কাজ করে চলে যান।
এনবিআর বিদেশিদের কাছ থেকে কর আদায়ে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। কর আদায়ে গত বছর টাস্কফোর্স গঠনসহ দেশের তিন বিমানবন্দর ও একটি স্থলবন্দরে বিশেষ বুথ স্থাপন করেছে এনবিআর।