বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বেশকিছু পাম্প হাউজে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পানি উত্তোলনের মেশিন (মোটর) বসানো হয়েছে। এরফলে নগরের যেসব এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছিলো তা আজ শুক্রবার থেকে নিরসন হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছে বিসিসি কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের নিজস্ব ওয়াটার ট্যাংকের মাধ্যমে ভ্রাম্যমানভাবে নগরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ হতো, তার পরিমানও বাড়নো হচ্ছে আজ থেকে।
বিসিসি সূত্রে জানাগেছে, মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ উদ্যোগে নগরের বোর্ড অফিস, সূরেন্দ্র ভবন ও রুপাতলী পানির পাম্প হাউজে পূরাতন মোটর সরিয়ে ৩০ হর্স পাওয়ারের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন মোটর সংযোজন করা হয়েছে। যা থেকে প্রতি ঘন্টায় ৭০-৮০ হাজার লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
এছাড়াও জরুরী প্রয়োজনে আরো ২ টি ২৫ হর্স পাওয়ার সম্পন্ন পানি উত্তোলনের মেশিন (মোটর) সংরক্ষনে রাখা হয়েছে। এরফলে কোন মোটরে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষনিক এই মোটর ব্যবহার করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। অপরদিকে ৩ রমজান থেকে নিরবিচ্ছিন্ন পানি সরবরাহের জন্য সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব ওয়াটার ট্যাংকের মাধ্যমে প্রতিদিন বরিশাল নগরের বিভিন্ন এলাকায় ১৫ হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানি দেয়া হচ্ছিলো। তবে এভাবে এখন থেকে ১০ হাজার লিটার বাড়িয়ে ২৫ হাজার লিটার পানি নগরবাসীর জন্য সরবরাহ করা হবে।
এদিকে নগরবাসীর সাময়িক কষ্টের জন্য মেয়র দুঃখ প্রকাশ করে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ জানান, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুততার সাথে এ সমস্যা লাঘব করার চেস্টা চলছে। তবে প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, বরিশাল নগরে প্রতিদিন এক কোটি ২০ লাখ গ্যালন পানির প্রয়োজন। স্বাভাবিক সময়ে বিশুদ্ধ পানির সংকটের বিষয়টি সামনে না আসেলও প্রতি বছর গরমের সময় বিশেষ করে চৈত্র মাস থেকে সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। খাল, পুকুর ও নদী ভরাট এবং ভূগর্ভের পানির যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে এই সময়টায় বরিশালে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নেমে যায়। এমনকি বর্তমান সময়ে যাদের ব্যক্তিগত গভীর নলকূপ রয়েছে, তারাও পানির সংকটে পরেন।
নগরের অনেক জায়গায় শত চেষ্টা করে মোটর চালিয়েও পানি সরবরাহ করতে পারেন না বাসিন্দারা। আবার বিগত কয়েক বছর ধরেই গরমের এই সময়ে নানান কারণে সিটি করপোরেশনও নগরবাসীকে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ দিতে পারে না। পানির সংকট নিরসনে বিগত মেয়রের সময়কালে নগরের দুই প্রান্তে দুটি সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ করা হয়। যদিও কার্যত এ দুটি এখনো নগরবাসীকে কাঙ্খিত সেবা দিতে পারেনি।
তবে বর্তমান পরিষদ যত্রতত্র গভীর নলকূপ স্থাপনে কঠোরতা প্রয়োগের পাশাপাশি বিসিসি কর্তৃপক্ষের নিজস্ব পাম্প হাউজগুলো থেকে পানি সরবরাহের পরিমান বাড়ানোর কার্যক্রম হাতে নেয়।