বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স সাইট অ্যামাজন ঠকিয়ে অর্ধকোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দিল্লির এক যুবক। একুশ বছর বয়সী শিবম চোপড়া নামে ওই যুবকের কৌশলও ছিল খুব সহজ।
অ্যামাজনে ১৬৬টি দামি ফোনের অর্ডার করে সেগুলো হাতে পাওয়ার পর তিনি জানাতেন তার কাছে ডেলিভারি হওয়া বাক্সগুলো ছিল খালি। এরপর অ্যামাজনের কাছে উল্টো নিজের পাঠান অর্থ দাবি করতেন তিনি। আর হাতে পাওয়া ফোনগুলো দিতেন বিক্রি করে।
দিল্লি পুলিশ বলছে, চলতি বছরের এপ্রিল আর মে মাসে ঘটে জালিয়াতির এই ঘটনা।
তবে অ্যামাজন যখন বুঝতে পারে তাদের আসলে ঠকানো হচ্ছে তখন তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি শিবমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের সময় শিবমের কাছ থেকে ১৯টি মোবাইল ফোন, নগদ ১২ লাখ টাকা নগদ ও চল্লিশটি ব্যাঙ্ক পাসবুক ও চেকবুকও জব্দ করেছে পুলিশ।
কী করতেন শিবম
শিবম প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে অ্যামাজনে দুটি দামি ফোন অর্ডার করেছিলেন। ফোন দুটি নিয়ম মতো হাতে পাওয়ার পর তিনি দাবি করে বসেন যে, তার কাছে ডেলিভারি হওয়া বাক্সগুলো ছিল খালি। অ্যামাজনের কাছে তিনি দাবি করেন, তাকে যেন টাকা ফেরত দেয়া হয়। খুব সহজেই ওই টাকা ফেরত পেয়ে যান তিনি।
এরপর চলতে থাকে একের পর এক অর্ডার। অ্যাপেল, স্যামসাং বা ওয়ানপ্লাস ব্র্যান্ডের দামি দামি মোবাইল অর্ডার করেন আর একই কথা জানান তিনি খালি বাক্স পেয়েছেন। অ্যামাজনও তাকে টাকা ফেরত দিতে থাকে। তিনিও মোবাইলগুলো বিক্রি করে দিতে থাকেন।
তবে এর জন্য একটু কৌশল খাটিয়েছিলেন শিবম। অর্ডারগুলোর জন্য তিনি ব্যবহার করেছিলেন আলাদা অ্যাকাউন্ট। প্রতিটি অ্যাকাউন্ট খুলতে তিনি সাহায্য নিন স্থানীয় এক দোকানদারের।
ওই দোকানদার শিবমকে প্রায় দেড়শো সক্রিয় সিমকার্ড সরবরাহ করেন। সেগুলো ব্যবহার করেই খোলা হয় অজস্র অ্যামাজন অ্যাকাউন্ট।
এখানেই শেষ নয়, কোনো অর্ডারেই শিবম নিজের ঠিকানা ব্যবহার করতেন না। একটি ভুয়া ঠিকানা দিতেন তিনি। এরপর ডেলিভারি বয় ওিই ঠিকানা না পেয়ে তাকে ফোন করতেন এবং তিনি তখন অন্য কোথাও থেকে ডেলিভারি নিয়ে নিতেন। এরপর যথারীতি অ্যামাজনকে অভিযোগ করতেন তিনি মোবাইল পাননি এবং সে মোতাবেক টাকাও ফেরত পেতেন।
তবে বারবার একই পথে ঠকাতে গিয়ে এখন নিজেই পুলিশের জালে ফেঁসে গেছেন ওই যুবক। তার সঙ্গে ফেঁসেছেন তাকে সিম কার্ড সরবরাহ করা ওই যুবকও।
সূত্র : বিবিসি বাংলা।