শামীম আহমেদ : বরিশালে এক অসহায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি জবর দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে অবৈধভাবে ওই জমিতে বিবাদীদের পক্ষ নিয়ে ঘর নির্মান করে দেয়ারও পায়তারা করছে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম।
আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃতঃ শাহ আলম এর স্ত্রী ফরিদা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনের এক লিখিত বক্তব্যে ফরিদা বেগম বলেন , তার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃতঃ শাহ আলম এর পিতা গফুর মিয়া। তার দুই ছেলে ও পাঁচ কণ্যা সন্তান রয়েছে। বরিশাল নগরীর রুপাতলী মৌজায় এসএ খতিয়ান নং ৫৯৭, দাগ নং ৪১২, ৪১৪ ও ৩৮৬ দাগে ১৭৮ শতাংশ জমি রয়েছে। স্থানীয়ভাবে আপোষ মিমাংশা অনিুযায়ী এবং বিএস পর্চায় আমার শ্বশুর মৃতঃ গফুর মিয়ার মেয়ে সরোয়ারা বেগম তার দুই সন্তান ফারজানা নূর ও ফারসিহা ফারহানুর কে তিন দাগে ১৯ শতাংশ জমি দিয়ে দেয়। বর্তমানে রেকডমুলে তারা ওই সম্পত্তির মালিক।
এছাড়া মৃতঃ গফুর মিয়ার দুই ছেলে ও চার মেয়ে এই আপোষ মিমাংশা এবং বিএস পর্চা অনুয়ায়ী মেনে নিলেও শুধু সরোয়ারা বেগম এর দুই মেয়ে তা মেনে নেয়নি। বর্তমানে তারা ক্ষমতাসীন দলের লোকদের সাথে প্রভাব বিস্তার করে এবং প্রশাসনের সহযোগীতায় রাস্তা সংলগ্ন এক স্থান থেকে ১৯ শতাংশ জমি দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। অথচ এই রাস্তা সংলগ্ন জমির বিএস পর্চা অনুযায়ী সাড়ে ৯ শতাংশ জমির মলিক হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত্য শাহ আলম এর স্ত্রী ফরিদা বেগম । বাকী ৯শতাংশ জমির মালিক মৃত: শাহ আলম এর রড় ভাই মৃতঃ শাহজাহানের স্ত্রী ও সন্তারা। অথচ ওই জমি জবর দখল করতে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে হুমকী ধামকী প্রদান করা হচ্ছে।
এঘটনায় মৃতঃ গফুর মিয়ার দুই ছেলে ২০১৮ সালে ২৭ সেপ্টেম্বর বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে আব্দুল গফুর মিয়ার ওয়ারিশ পাঁচ কণ্যাকে বিবাদী করে মোকাদ্দমা দায়ের করে। আদালতের বিচারক ঐ বছরের ১৪ নভেম্বর বিবাদীদের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা শোকজ করেন। কিন্তু বিবাদী ফারজানা নূর ও ফারসিহা ফারহানুর পুলিশের সহয়তা নিয়ে তাদের পছন্দকৃত জমিতে স্থাপনা নির্মান করে।
সরোয়ারা বেগমের মেয়ে জামাই স্থানীয় ১৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মীর জসিমের ছোট ভাই মীর আজমল উদ্দিন (নাঈম)। তিনি তার স্ত্রী ফারজানা নুরের পক্ষ নিয়ে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে জমি দখলে মেতে উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশ টালবাহানা করছে। একই সাথে কোতয়ালী থানার ওসি বিবাদীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
এবিষয়ে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলামের সাথে আলাপের চেষ্টা করলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেনি।
ঘটনার সততা স্বিকার করে বরিশাল মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোখলেচুর রহমান বলেন, ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি সত্যিকারের অসহায় । এর নেপথ্যে কিছু প্রভাবশালী মহল কাজ করছে। আমাদের যতটুকু সম্ভব আমরা তার জন্য সহযোগীতা করার চেষ্টা করবো।
বরিশাল সিটি কপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকির হোসেন মোল্লা জানান, পরিবারটি সত্যিকারের অসহায়। আমি তাদের সব কিছই শুনেছি। কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের মদদে এমনটা হচ্ছে। এখানে মিডিয়া ও প্রশাসন যদি তাদেরকে সহযোগীতা করে তবে আমি তাদের পাশে থাকবো।