মজিবর রহমান নাহিদ ॥ বয়স ৭০এর বেশি, হাটাচলা করতে পারেন কোনমতে, বয়সের ভারে ন্যুব্জ। ভারী কাজও করতে পারেননা। তাই বেঁচে থাকার তাগিদে আয়ের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছেন বিভিন্ন রকমের শাকপাতা বিক্রির ব্যবসা। বলছি বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে শাকপাতা বিক্রি করা আমেনা বেগমের কথা। গত ৫ থেকে ৭বছর ধরে বিভিন্ন রকমের শাক-সবজি বিক্রি করেই সংসারে আয়ের জোগান দিচ্ছেন এই বৃদ্ধা।
নাতি-নাতনি সহ ৫জনের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় ইট ভাঙ্গা শ্রমিক ছেলের। কাজ করার শক্তি নেই তারপরও কারো কাছে হাত পাতেন না। তাই জীবিকা নির্বাহের তাগিতে জীবনের অন্তিম মুহূর্তে এসে ফুটপাতে সবজি বিক্রি করেছেন। তিনি নগরীর বালুর মাঠ এলাকায় থাকেন। গ্রামের বাড়ি বাকেরগঞ্জ উপজেলায়। আমেনা বেগম এই প্রতিবেদককে জানায়, বিভিন্ন স্থান থেকে কচুশাক, কলমি শাক, হেলঞ্চা শাক তুলেন তিনি। পরে তা বিক্রি করতে বসে পরেন বিভিন্ন ফুটপাতে। তিনি বেশিরভাগ সময়ই থাকেন বঙ্গবন্ধু উদ্যানে।
এই শাক বিক্রি করে কোনদিন ৫০ টাকা আবার কোন কোন দিন ১০০টাকা আয় হয় আমেনা খাতুনের। তবে তার বেশির ভাগই চলে যায় ঔষধের পিছনে।
তিনি বলেন, ‘পোলার টাহা দিয়া সংসার চালাইতে কষ্ট হয়, নিজের বয়স হইছে ঔষুধ খাওলা লাগে পেরতেক দিন। হেইরপর তেল-সাবান কেনা লাগে। এই হাকপাতা বেইচ্চা যা পাই তা দিয়া কোনমতে চলে।’
আমেনা বেগম অশ্রুশিক্ত হয়ে বলেন, ‘বাবা অনেক কষ্ট হয় এই বয়সে বিভিন্ন হানে যাইয়া হাগপাতা তুলতে। সরকার মানষের কত কিছুই দেয়, আমার লইজ্ঞা যদি হ্যারা কিছু করতে তাইলে আমার অনেক উপকার হইতো।’ দেশ নিম্নআয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্য আয়ে উত্তোলনে, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তির ব্যাপক পরিবর্তন হলেও আমেনা বেগমের মতো এমন অনেক বৃদ্ধার ভাগ্য আজও পরিবর্তন হয়নি।