পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, বর্ষা চিন্তা করে প্রকল্প গ্রহণ করেন দুর্নীতিবাজরা। কিন্তু বর্তমান সরকার দুর্নীতিমুক্ত। তাই বড় প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। পৃথিবীর সব দেশের চেয়ে বাংলাদেশের মাটি নরম। যে কারণে জিও ব্যাগ এবং ব্লক দেওয়ার পরও নদীর বাঁধ রক্ষা করা যায় না। তাই বৃহৎ প্রকল্পের মাধ্যমে নদী শাসনের বিকল্প নেই।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বিকেল সোয়া ৫টায় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক এলাকায় কুশিয়ারা নদীর ভাঙন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাহিদ ফারুক বলেন, কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে বিস্তীর্ণ এলাকা যাতে নদীগর্ভে বিলীন না হয়; তাই পুরো নদীকে ঘিরে বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। ৩০ মিটার ভেতর থেকে বাঁধ রক্ষার কাজ টেকসই নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই এখন থেকে ৭০ মিটার ভেতর থেকে নদী শাসন প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে।
আসন্ন ঘূর্ণিঝড় ও বর্ষা মৌসুমে কুশিয়ারার ভাঙন মোকাবেলায় প্রকল্প গ্রহণ করা হবে কি না জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্ষা চিন্তা করে প্রকল্প গ্রহণ করে দুর্নীতিবাজরা। কিন্তু বর্তমান সরকার দুর্নীতিমুক্ত। তাই বড় প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। পুরো টিমকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প অল্প সময়ে হয় না। সু-পরিকল্পনা ও চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে প্রকল্প হাতে নিতে হবে।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন- সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ মিলাদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মাহফুজুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব মাহমুদুল হাসান, প্রধান প্রকৌশলী নিজামুল হক ভূঁইয়া, হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফজলুল জাহিদ পাভেল, হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান, সদস্য ও জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ প্রমুখ।
পরে স্থানীয় দীঘলবাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এলাকাবাসী আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নদী ভাঙনের মূল কারণ। এ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। নদীমাতৃক আমাদের দেশে নদী ভাঙন একটি বড় সমস্যা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছেন।
হবিগঞ্জের তিনটি উপজেলার দুই শতাধিক গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে কুশিয়ারা নদীর ভাঙনের শিকার হচ্ছেন। প্রতি বছর ১৫ মিটার করে জনপদ নদীতে যাচ্ছে। নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক গ্রামের পুরোটাই চলে গেছে নদীতে। অনেক হাট বাজার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বিলীন হয়েছে নদীতে। বিলীন হওয়ার পথে অনেকের বাড়িঘরও।