দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মাসেতুর জাজিরা প্রান্তে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারের ওপর ৯ম স্পেন বসানো হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। আজ বুধবার মুন্সিগঞ্জের কুমারভোগ থেকে সকাল পৌনে ৯টার দিকে রওয়ানা হয়ে শক্তিশালী ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই এর মাধ্যমে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের ৯ম স্প্যানটি দুপুর ১২টার দিকে জাজিরা প্রান্তে এসে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে যে কোন সময় ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো হবে বলে সেতু বিভাগের প্রকৌশলী সূত্র জানিয়েছে। জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে ৮ম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হবে ১২০০ মিটার। এছাড়াও গত বছরের মাওয়া পয়েন্টে ৪ ও ৫ নম্বও পিলারের উপর আরেকটি স্পেন বসানো হয়। ফলে সেতুর দুই প্রান্তে দৃশ্য মান হবে ১ হাজার ৩৫০ মিটার ।
সেতু বভিাগ সুত্রে জানাগেছে, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নাম্বার পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নাম্বার পিলারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যান, ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নাম্বার পিলারের ওপর তৃতীয় স্প্যান, ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নাম্বার পিলারের ওপর চতুর্থ স্প্যান ২৯ জুন ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের ওপর পঞ্চম স্প্যান, ২৩ জানুয়ারী ২০১৯ ৩৬ ও ৩৭ বসানো হয় ৬ষ্ঠ স্প্যান এবং সর্বশেষ ২০ ফেব্রুয়ারী জাজিরারর নাওডোবা প্রান্তে ৭ম স্প্যান বসানোর মধ্যদিয়ে জাজিরা প্রান্তে ১০৫০ মিটার ও মুন্সীগঞ্জ প্রান্তের ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের উপর বসানো ১ টি স্প্যান সহ এখন দৃশ্যমান হয় ১২০০ মিটার। সেতুর ৯ম স্পেন বসানো হলে দুই প্রান্তে দৃশ্য মান হবে ১ হাজার ৩৫০ মিটার দৃশ্যমান হবে।
৪২টি খুটির ওপর এমন ৪১টি স্প্যানের সাহায্যে পদ্মার বুকে মাথা উঁচু করে দাড়াবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের উপর ৪১টি স্পেন বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতু নিমার্ন করা হবে। এর মধ্যে ২১টি পিলার এরই মধ্যে দৃশমান হয়েছে। সেতুর নির্মান কাজ শেষ হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাবে কয়েকগুন।
৯ম স্প্যানটি বসানোর সংবাদে পদ্মাপাড়ের মানুষের মধ্যে ব্যাপক ভাবে উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। আর এ সেতুর কাজ শেষ হলে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে গোটা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে। দেশের অর্থনৈতিতে নুতন মাত্রা যোগ হবে। পদ্মাসেতুর দু’পাড়ে গড়ে উঠবে বিশ্বমানের শহর। কল কারখানায় ভরে উঠবে এ এলাকা। শ্রমজীবি মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে। সর্বক্ষেত্রে ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে সেতুর জাজিরা প্রান্তে। ইতোমধ্যে এপ্রোজ সড়ক দিয়ে গাড়ি চলা চল শুরু করেছে। টোল প্লাজার নির্মাণ কাজ শেষ করেছে সেতু বিভাগ। দোতলা এ সেতুর নিচ তলায় চলবে ট্রেন। স্থাপন করা স্পেন গুলোয় এখন রেলের স্লাব বসানো কাজ চলছে। জাজিরা প্রান্তের স্পেন গুলোয় ১২৮টি স্লাব বসানো হয়েছে। পুরো সেতুর ২ হাজার ৯৫৯টি স্লাব বসানো হবে। মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়াডে স্পেন ও স্লাব বসানোর কাজ চলছে।