রান্নাবান্নায় ঝামেলা এড়াতে মেনে চলুন কিছু বিশেষ টিপস!

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

আমরা কম বেশি সবাই রান্না জানি। কারোটা খুব ভালো হয়, কারোটা একটু কম। আজ কিছু টিপস নিয়ে কথা বলবো । অনেকেই হয়তো অনেক কিছু জানেন। তারপরও নতুন কিছু জানাবার চেষ্টা করলাম ।

দাগ মেটানোর নানা উপায়
  • ছুরি বা কাঁচি থেকে মরচে দাগ তোলার জন্য ছুরি ভিনেগারে বেশ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে এরপর আধা ঘণ্টা ফুটিয়ে নিন।
  • কম্পিউটারের কি-বোর্ড বা মাউসে ময়লা জমলে তুলার প্যাডে কয়েক ফোঁটা নেইল রিমুভার দিয়ে ময়লার ওপর বুলিয়ে নিন। সব ময়লা উঠে যাবে।
  • অনেক সময় বাসনের স্টিকার সহজে তোলা যায় না। তুলতে গেলেও আঠালো ভাব লেগে থাকে। তাই হাত দিয়ে না তুলে একপাশে মোমবাতি ধরুন। এরপর মোমবাতি সরিয়ে এককোণ থেকে স্টিকার তুলে ফেলুন।
  • রান্না করার পর প্রেশার কুকারে অনেক সময় হলদে দাগ পড়ে। এই দাগ তুলতে কুকারে লেবুর রস ও লেবু একসঙ্গে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিন। দাগ থাকবে না। ভিনেগার দিয়ে ফোটালেও দাগ থাকবে না।
  •  বালতি বা অন্য কোনো প্লাস্টিকের জিনিসে মরচের দাগ পড়লে তারপিন তেলের সঙ্গে লবণ মিশিয়ে ঘষুন। দাগ নিমেষে উঠে যাবে।
  •  কাপড়ের কালো দাগ তোলার জন্য দাগের ওপর কেরোসিন ঘষুন। এরপর এক টুকরা লেবু ঘষে দিন। সাবান দিয়ে কাপড় কেচে রোদে মেলে দিন।
  •  পিতলের কালচে দাগ তুলতে ময়দা, লবণ ও ভিনেগারের পেস্ট বানিয়ে পিতলের কালো দাগের ওপর মাখিয়ে দিন। ১০ মিনিট পর নরম কাপড় দিয়ে ঘষে তুলে ফেলুন। চকচকে হয়ে যাবে।
  •  রুপার গয়না কালো হয়ে গেলে একটি পাত্রে গয়না রেখে পানি দিয়ে কয়েক টুকরো আলু দিন। ১০ মিনিট ফোটান। নামিয়ে ঠাণ্ডা হলে পানি থেকে তুলে নরম কাপড় দিয়ে ঘষে নিন।

জেনে নিন

  • কাঁচা শাকসবজি ও কাঁচামরিচ বাজার থেকে আনার পর এগুলোকে ছড়িয়ে রেখে বাতাসে পানি শুকিয়ে গেলে শুকনা পলিপ্যাক, কাগজের ঠোঙায়, কাপড়ের ব্যাগে বা কন্টেইনারে করে রেফ্রিজারেটরে রাখতে হবে। পলিপ্যাকে ছিদ্র করেও রাখা যেতে পারে, যেন বাতাস বের হয়ে যায়।
  • কাঁচামরিচের বোঁটা ফেলে পানি শুকিয়ে কাপড়ের ব্যাগ বা কাগজের ব্যাগ এ সংরক্ষণ করলে বেশি দিন ভালো থাকবে ।
  • বাজার থেকে শাক বা ধনে পাতা আনলে পরিষ্কার করে বেছে শুকনা পলিপ্যাক বা কনটেইনারে রাখতে হবে।এ ক্ষেত্রেও কাপড়ের ব্যাগ বা কাগজে মুড়িয়ে রাখলে বেশি সময় ভালো থাকে ।
  • মাছ ও মাংস রান্না করার জন্য রেফ্রিজারেটর থেকে নামালে বরফ গলিয়ে বেশিক্ষণ বাইরে রাখা যাবে না। তাতে গরমে সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  • যেকোনো রান্না করা খাবার এক বা দুই ঘণ্টার মধ্যে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর আগেই সংরক্ষণ করতে হবে।
বেশি দিন খাবার  সংরক্ষণের উপায়

রান্না করা খাবার  প্রচণ্ড গরমে খাবার ভালো রাখাটা বেশ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকালের খাবার দুপুর গড়াতেই বাসি হয়ে যাচ্ছে। আর বাসি খাবার খেলে তো পেটের অসুখ হবেই। এ গরমে খাবার সংরক্ষণ করার বিষয় নিয়ে নানা পরামর্শ দিয়েছেন রান্নাবিদ সিতারা ফিরদৌস।

  • কাঁচা মাছ ও মাংস বাজার থেকে আনার পর ভালো করে পরিষ্কার করে ধুয়ে রেফ্রিজারেটরের বরফ চেম্বারে রাখতে হবে।
  • কাঁচা শাকসবজি ও কাঁচামরিচ বাজার থেকে আনার পর এগুলোকে ছড়িয়ে রেখে বাতাসে পানি শুকিয়ে গেলে শুকনা পলিপ্যাক, কাগজের ঠোঙায় বা কনটেইনারে করে রেফ্রিজারেটরে রাখতে হবে। পলিপ্যাকে ছিদ্র করেও রাখা যেতে পারে, যেন বাতাস বের হয়ে যায়।
  • কাঁচামরিচের বোঁটা ফেলে সংরক্ষণ করতে হবে।
  • বাজার থেকে শাক আনলে পরিষ্কার করে বেছে শুকনা পলিপ্যাক বা কনটেইনারে রাখতে হবে।
  • মাছ ও মাংস রান্না করার জন্য রেফ্রিজারেটর থেকে নামালে বরফ গলিয়ে বেশিক্ষণ বাইরে রাখা যাবে না। তাতে গরমে সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  • যেকোনো রান্না করা খাবার এক বা দুই ঘণ্টার মধ্যে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর আগেই সংরক্ষণ করতে হবে।
  • রান্না করা খাবার রেফ্রিজারেটরে রাখার আগে বাতাসে ঠান্ডা করে নিতে হবে। গরম খাবার রেফ্রিজারেটরে রাখা যাবে না ।
  • বেশি পরিমাণ খাবার রান্না না করে প্রয়োজনমতো রান্না করতে হবে।
  • যেকোনো খাবার রেফ্রিজারেটরে রাখার সময় কনটেইনার, ঢাকনাসহ বাটি—এসব ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • ফল যেটুকু খাওয়া হবে শুধু সেটুকু কাটতে হবে। বাকিটা ফ্রিজে রেখে দিতে হবে।
  • রেফ্রিজারেটর বেশি খুললে ও বন্ধ করলে ভেতরে বাতাস ঢুকে খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই বারবার না খুলে চেষ্টা করতে হবে রান্নায় যা যা লাগবে তা একবারে বের করে নেয়া ।
  • যেকোনো খাবার রেফ্রিজারেটরে রাখলে ঢাকনা দিয়ে রাখতে হবে, যেন এক খাবারের গন্ধ আরেক খাবারে না যায়।
  • রেফ্রিজারেটর না থাকলে যেকোনো বেলায় খাওয়ার পর বাকি খাবার জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করে জালি দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
ভ্রমণে খাবার

ঘরের বাইরে খাবার ভালো রাখতে ‘কতক্ষণের জন্য খাবার নেওয়া হচ্ছে, বিষয়টার ওপর গুরুত্ব দিয়ে খাবার সংরক্ষণের পদ্ধতি নির্বাচন করতে হবে ।

  • ঘরের বাইরে খাবার নিতে হলে যদি সাধারণ টিফিন বাক্স ব্যবহার করা হয় তাহলে খাবার বাতাসে ঠান্ডা করে নিতে হবে। কখনোই গরম গরম খাবার বাক্সে নেওয়া যাবে না, এতে খাবার গন্ধ হয়ে যেতে পারে।
  • কোল্ডপটে ঠান্ডাজাতীয় খাবার নিলে তা ঠান্ডা থাকবে।
  • যদি খাবার ঠান্ডা করার সময় না থাকে, তাহলে কর্মস্থলে যাওয়ার পর খাবারের বাক্সটা একটু খুলে রাখতে হবে, যেন গরম ভাপটা বের হয়ে যায়।
  • টিস্যু পেপারে কিংবা বাটার পেপারে রোল করে স্যান্ডউইচ, স্ন্যাকস-জাতীয় খাবার মুড়িয়ে নিলে খাবারের অতিরিক্ত তেল টিস্যু পেপার চুষে নেয় আর খাবারও ভালো থাকে অনেকক্ষণ।
  • চিকেন ফ্রাই, চিকেন রোল—এসব খাবার অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মুড়িয়ে নিলে নষ্ট হবে না।
  • গ্রিল, কাবাব—এসব খাবার অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে ছিদ্র করে মুড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে।
  • নুডলস বাটার পেপারে কিংবা টিফিন বাক্সে করে নেওয়া ভালো।
  • ভ্রমণে শুকনা খাবার নেওয়াই ভালো। অনেকক্ষণ খাবার ভালো থাকে।
  • খাবারে কাঁচা পেঁয়াজ দেওয়া না হলে তা অনেক্ষণ ভালো থাকে।

আচার সংরক্ষণের উপায়

  • সিরকা ও সোডিয়াম বেনজোয়েট দিলে আচার দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
  • পানি ব্যবহার করলে আচার তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়।
  • হাত দিয়ে আচার নাড়বেন না, চামচ ব্যবহার করুন। আচার বয়াম থেকে নেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে, চামচে যেন পানি না থাকে।
  • কাঁচেরচের বয়ামে আচার ভালো থাকে।
  • মাঝেমধ্যে আচার রোদে দিলে ভালো থাকে।
  • তেলে আচার ডুবিয়ে রাখলে আচারে ফাঙ্গাস পড়ে না।
  • আচারে তেল কম হলে তেল ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে দিলে গন্ধ হয় না।
  • চুনের পানি, ফিটকিরিতে আম ভিজিয়ে রাখলে আচার বানানোর সময় আম ভেঙ্গে যায় না।
  • যাদের আচার রোদে দেবার জায়গার অভাব তারা নিশ্চিন্তে আচার ডীপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন । চাটনি এভাবে রাখলে নষ্ট হবে না । সেক্ষেত্রে আচারে সিরকা বা সোডিয়াম বেনজোয়েট না দিলেও চলবে । তবে কাশ্মীরি আচারের ক্ষেত্রে সিরকা দেয়া হয় স্বাদ এর জন্য ।

রান্না করবার সময় না অন্য সময় কাপড়ে বিভিন্ন রকমের দাগের সমস্যায় আমরা প্রায়ই পড়ি। এ সমস্যার সমাধানের জন্য রইল দাগ তোলার কিছু টিপস।

  •  রঙিন কাপড় বা সিল্ক ফ্যাব্রিকের দাগ তুলতে হলে কাপড়টি বোরেঙ্ সলিউশনের মধ্যে ভিজিয়ে রাখুন। এ ছাড়া লবণ ও লেবুর রস একত্রে মিশিয়ে কাপড়ের ওপর লাগিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। ভিনেগার ও মুলতানি মাটির পেস্টও দাগ তোলার কাজে ব্যবহার করতে পারেন। দাগের ওপর লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে যাওয়ার পর ভেজা কাপড় দিয়ে দাগের ওপর ঘষুন। দাগ উঠে যাবে।
  •  কলমের দাগ তুলতে পারেন টমেটোর রস দিয়ে। এক টুকরো কাপড়ে কাঁচা টমেটোর রস লাগিয়ে নিন। এরপর ওই কাপড় দিয়ে দাগওয়ালা কাপড়টি কিছুক্ষণ ঘষুন। এক ঘণ্টার মতো রেখে দিন। তারপর প্রচুর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  •  কালির দাগটি প্রথমে ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নিন। এরপর টক দইয়ের মধ্যে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। খেয়াল রাখবেন, যেন কাপড় শুকিয়ে না যায়। এরপর গুঁড়ো সাবান ও প্রচুর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  •  এ ছাড়া কালির দাগের ওপর লবণ দিয়ে রাখুন। এরপর লেবুর রস দিয়ে কিছুক্ষণ ঘষুন। শেষে সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  •   কার্পেট বা সোফায় কালির দাগ পড়লে প্রথমে দাগের ওপর অল্প তরল দুধ ঢেলে দিন। এরপর ভেজানো তুলা দিয়ে ঘষুন। কিছুক্ষণের মধ্যে দাগ উঠে যাবে।

লিখেছেন – পাপিয়া সুলতানা