গোলাম সারওয়ার পেলেন আজীবন সম্মাননা

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস কাউন্সিল দিবসে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সমকালের প্রয়াত সম্পাদক গোলাম সারওয়ারকে আজীবন সম্মাননা (মরণোত্তর) পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ সম্মাননা পদক তুলে দেন। গোলাম সারওয়ারের পরিবারের পক্ষে এ পদক গ্রহণ করেন তার জামাতা মিয়া নাইম হাবিব।

এ ছাড়া একই দিন বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দুই প্রতিষ্ঠান ও চার ব্যক্তিকে প্রেস কাউন্সিল পুরস্কার দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন ও জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ এখন অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিক। এটা নিঃসন্দেহে গণমাধ্যমের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বেসরকারি খাতের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। একইসঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে, এসব গণমাধ্যম যাতে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ব্যবহূত না হয়। তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদ প্রচারের পাশাপাশি বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে যাতে এসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে, তাও নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিলকে রক্ষীর (ওয়াচডগ) ভূমিকা পালন করতে হবে।

গণমাধ্যমকে নিয়ম মেনে প্রতিযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, গণমাধ্যমের বিকাশের ফলে এ খাতে প্রতিযোগিতাও বেড়েছে। তাই প্রতিযোগিতা করেই গণমাধ্যকে এগিয়ে যেতে হবে। এসব ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার নিয়মনীতি মেনে এবং জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, গণমাধ্যম, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। একটি ছাড়া অন্যটি অচল। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারে সংবাদমাধ্যম। তবে তা হতে হবে নিয়মনীতি ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে। মিথ্যা, উস্কানিমূলক বা হলুদ সাংবাদিকতা কখনই গণতন্ত্রের বন্ধু হতে পারে না।

মুদ্রিত সংবাদপত্রের মতো অন্যান্য গণমাধ্যমের জন্যও নীতিমালা করতে প্রেস কাউন্সিলকে তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল সংবাদপত্র এবং সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য যে নীতিমালা ও আচরণবিধি প্রণয়ন করেছে, তা দেশে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধে সহায়ক হয়েছে বলে আমি মনে করি। অন্যান্য গণমাধ্যমের ক্ষেত্রেও এই নীতিমালা ও আচরণবিধির প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করতে হবে।

নবীন সাংবাদিকদের সৎ ও নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, সাংবাদিকতায় এখন তরুণ শক্তি যুক্ত হচ্ছে। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় উচ্চশিক্ষিত ছেলেমেয়ে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে। গণমাধ্যমে তাদের সম্পৃক্ততা এ পেশার মর্যাদা ও বিকাশকে আরও এগিয়ে নেবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

প্রাতিষ্ঠানিক সম্মাননা ক্যাটাগরিতে দৈনিক ইত্তেফাক, আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদী, গ্রামীণ সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক মুক্তবার্তার সহকারী সম্পাদক মুরশিদ আলম, উন্নয়ন সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের বিশেষ প্রতিনিধি জসীম উদ্দিন, নারী সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে মাদারীপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক সুবর্ণগ্রাম পত্রিকার বার্তা সম্পাদক আয়শা সিদ্দিকা (আকাশী), আলোকচিত্র সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে নিউ এইজের ফটোসাংবাদিক সনি রামানীকে প্রেস কাউন্সিল পদক দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু, তথ্য সচিব আবদুল মালেক, প্রেস কাউন্সিলের সদস্য বিএফইউজে- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল।