ভোলার লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে অংকুর বেগম (৩০) নামে আরও এক নারীরে মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় সুরমা (২৫), অংকুর বেগম (৩০) ও তার ১০ বছরের মেয়ে খাদিজাসহ মোট তিনজনের মৃত্যু হলো।
অংকুরের মামাতো ভাই আমির হোসেন ও স্থানীয়রা জানান, নিহত অংকুর বেগমের বাড়িতে বেড়াতে আসেন তার ছোট বোন সুরমা বেগম। শুক্রবার রাতে খাবার খেয়ে ঘরের সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। ভোররাতের দিকে দুর্বৃত্তরা ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টিনসেডের ঘর হওয়ায় আগুন মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তাদের ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই সুরমা বেগমের মৃত্যু হয়। এছাড়াও এ ঘটনায় সুরমার বড় বোন আংকুর বেগম ও তার মেয়ে খাদিজা আহত হয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে শনিবার সকালে অংকুর ও খাদিজার অবস্থায় আশঙ্কাজনক হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে খাদিজা মারা যায়। এছাড়াও খাদিজার মা অংকুর বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় মার যান অংকুর।
অংকুর ও সুরমার বোন শাহিনুর বেগম জানান, তাদের ছোট বোন সুরমার সঙ্গে প্রায় এক বছর আগে বিয়ে হয় বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা এলাকার বাসীন্দা মো. রফিকের। বিয়ের পর থেকে রফিক যৌতুকের জন্য বিভিন্ন অজুহাতে সুরমার ওপর নির্যাতন করতো। এ নিয়ে এলাকায় মীমাংসা হলেও শান্ত হয়নি রফিক। পরে সুরমা গত এক মাস আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি চলে আসে এবং রফিকের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ কথা রফিক শুনতে পেয়ে মোবাইলে হুমকি দিতে থাকে সুরমাকে। এ ঘটনার জের ধরে রফিক ঘরে আগুন জ্বালিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
লালমোহন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবির জানান, রফিক পলাতক রয়েছে। পুরো ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।