বরিশাল সোনালী ব্যাংক চৌমাথা শাখা থেকে এক রাজমিস্ত্রীর ৪৯ হাজার টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে বলে খবর মিলিছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি দ্রুত ব্যাংক পাড়াসহ নগরীতে ছড়িয়ে পরলে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়। বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কোতয়ালী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান।
সূত্রে জানা গেছে, নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথাস্থ সরকারী সোনালী ব্যাংক (শাখায়) সকাল ১০টার দিকে ৪৯ হাজার টাকা জমা দিতে যায় নবগ্রাম রোডের রুইয়ার বাসিন্দা রাজমিস্ত্রী মালেক হাওলাদার (৬৫)। সকালে ব্যাংকে গ্রহকদের ভিড় না থাকলেও সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার মোঃ নিজামুল হক রাজ মিস্ত্রী মালেক হাওলাদারকে বলেন, চাচা একটু ওয়েট করেন, আপনার টাকাটা পড়ে জমা নিচ্ছি। একথা বলে বৃদ্ধ রাজমিস্ত্রী মালেক হাওলাদারকে প্রায় ১০ মিনিট দাড় করিয়ে রেখে তার পরে আসা ২জন গ্রাহকের টাকা জমা নেয় ক্যাশিয়ার মোঃ নিজামুল হক। প্রায় ১৫ মিনিটের মত দাড়িয়ে থেকে বৃদ্ধ রাজমিস্ত্রী মালেক হাওলাদার ক্যাশিয়ার মোঃ নিজামুল হকের সামনের নিরাপত্তা গ্লাস ভেদ করে ৪৯ হাজার টাকা রাখেন। মালেক হাওলাদার ক্যাশিয়ার মোঃ নিজামুল হকের সামনে টাকা রাখলে মুহুর্তের মধ্যেই মালেক হাওলাদারের পাশে দাড়িয়ে থাকা অজ্ঞাত এক ব্যাক্তি বলেন, চাচা নিচে আপনার কিছু টাকা পড়েছে। এসময় অজ্ঞাত সেই ব্যাক্তির কথামত মালেক হাওলাদার নিচে তাকিয়ে দেখতে পায় খুচরো কয়েকটি টাকা পড়ে রয়েছে। সেই টাকা তুলে দেখতে পান পাশের সেই লোকটি আর নেই। এসময় রাজমিস্ত্রী ক্যাশিয়ার মোঃ নিজামুল হকের কাছে তার জমাকৃত ৪৯ হাজার টাকার রশিদ চাইলে ব্যাংক ক্যাশিয়ার বলেন, আপনি তো টাকাই জমা দেননি। রশিদ দিব কিশের?
এসময় মালেক হাওলাদার ক্যাশিয়ারকে বলেন, আপনার সামনেই তো টাকা রাখলাম এবং আপনি বললেন একটু পড়ে নিচ্ছি। তাহলে টাকা গেল কোথায়? এসময় ক্যাশিয়ার মোঃ নিজামুল হক মালেক হাওলাদারকে সাফ জানিয়ে দেন আমি আপনার ৪৯ হাজার টাকা হাতেই নেইনি। কে নিয়েছে দেখেন। এসময় ক্যাশিয়ারের সাথে মালেকের বাগবিতন্ডার সৃস্টি হলে বিয়ষটি ম্যানেজার দেবাশিষ কুন্ডের কানে পৌছে যায়।
এসময় তিনি ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ সার্চ করে দেখে দেখতে পান, মালেক হাওলাদারের পাশে দাড়ানো সেই অজ্ঞাত লোকটি ৪৯ হাজার টাকার বান্ডিল নিয়ে সটকে পরেছেন। অজ্ঞাত ব্যাক্তি টাকা নেওয়ার সময় ব্যাংক ক্যাশিয়ার মোঃ নিজামুল হক তাকিয়ে রয়েছেন অন্যদিকে। যদিও সেই অজ্ঞাত ব্যাক্তির চেহারা সিসিটিভি ফুটেজে স্পস্ট দেখা যাচ্ছে না। সে কৌশলে নিজের মুখ লুকিয়ে কয়েক সেকেন্টের মধ্যেই ব্যাংক ত্যাগ করেন।
বিষয়টি শুনে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এবং ব্যাংক ম্যানেজার দেবাশিষ কুন্ডকে একটি সাধারন ডায়েরি করতে বলা হয়েছে।
এঘটনায় টাকা খোয়ানো মালেক হাওলাদার বলেন, ৪৯ হাজার টাকা আমার অনেক কষ্টের ফসল। এই টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পেছনে ক্যাশিয়ার মোঃ নিজামুল হকের যোগসাজোস রয়েছে। কারন টাকা জমা দিতে গিলে সে টাকা জমা না নিয়ে আমার সাথে তালবাহান করেছে। পরে কৌশলে আমাকে বোকা বানিয়ে আমার কষ্টের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এবিষয়ে পুলিশের উধ্বর্তন মহলের আশু দৃস্টি কামনা করেন টাকা খোয়ানো মালেক হাওলাদার।
এবিষয়ে ব্যাংক মেনেজার দেবাশিষ কুন্ড বলেন, মালেক হাওলাদারের টাকা খোয়া গেছে সেটা সত্য। ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ কোতয়ালী মডেল থানায় সরবরাহ করা হয়েছে।
এসময় এ ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, গ্রাহকের টাকা ফেরত পেতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সব ধরনের সহযোগী করতে প্রস্তুত রয়েছে। এসময় ব্যাংক গ্রাহকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত টাকা খোয়ানো মালেক হাওলাদার ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে রাতে কোতয়ালী মডেল থানায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।