একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক কারণে বিএনপির নেতাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন সময় দাবি করা হলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা তা অস্বীকার করেছেন। এমনকি নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ আছে বলেও দাবি করেন তিনি।
শনিবার সকালে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটের মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বিদ্যমান আছে। পুলিশ আমাদের কথা মান্য করছে। আমাদের কথার বাইরে বিনা কারণে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করে না, করছে না। আইন অনুযায়ী যেভাবে এগোনোর কথা সেভাবেই এগোচ্ছে। পুলিশ কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আছে। পুলিশকে কমিশন নির্দেশনা দিয়েছে। তারা আমাদের কথা দিয়েছে এবং সে অনুযায়ী তারা কাজ করছে।
তিনি বলেন, সরকারের কোনো নির্দেশ নেই। নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের নির্দেশ মাঠে যায় এবং সেটাই প্রতিফলিত হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগের বিএনপির একাধিক প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে দাবি করেছে- তফসিল ঘোষণার পরও তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
এ ছাড়া নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য ঢাকায় এসে পাঁচ দিন আগে রাজধানীর পল্টন থেকে নিখোঁজ যশোরের বিএনপি নেতার লাশ পাওয়া গেছে বুড়িগঙ্গায়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসে ইসি। সকাল ১০টায় নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে এ বৈঠক শুরু হয়। এদিন ঢাকা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, শেরপুরসহ কয়েকটি জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা যোগ দেন। এ ছাড়া রোববার এবং সোমবারও এ সংক্রান্ত বৈঠক করবে ইসি।
সাধারণত এসব বৈঠকে সিইসির স্বাগত বক্তব্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত গণমাধ্যমকর্মীরা সভার ভেতরেই থাকেন। আজকেও এ দাবি জানালেও তাতে সায় দেয়নি কমিশন। এসময় নির্বাচন কমিশনাররা একে অন্যের সঙ্গে কানাকানি করে কথা বলেন। পরবর্তীতে গণমাধ্যমকর্মীদের অনুষ্ঠানস্থল ছাড়তে অনুরোধ করা হয়।
সাংবাদিকদের বের করে দেয়ার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে সিইসি পরে বলেন, এই সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়নি। গণমাধ্যমকর্মীদের অনুষ্ঠানের প্রথম অংশজুড়ে থাকতে দিলে ভালো হতো। আগামীকালও একই ধরনের বৈঠক আছে। সেখানে গণমাধ্যমকর্মীদের থাকতে দেয়া হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচন পরিচালনা করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসারদের জেলা-উপজেলা ও নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক দায়িত্ব প্রদান করে থাকি। রিটার্নিং অফিসাররা আবার সহকারি রিটার্নিং অফিসার এবং প্রিসাইডিং অফিসারদের মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে থাকে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করবেন। এসব বিষয়সহ আইনের বিভিন্ন বিধিবিধান সম্পর্কে তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।