শাশুড়ি হত্যায় জামাই-বেয়াইন কারাগারে

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

ঢাকার অদূরে আশুলিয়ার চলন্ত বাস থেকে বাবাকে ফেলে দিয়ে মেয়ে হত্যার মামলায় জামাই নূর ইসলাম ও তার মা আমেনা বেগমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

দুইদিনের রিমান্ড শেষে বুধবার তাদের ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শাহজাহান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে রোববার ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম তাদের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

অপরদিকে নিহত জরিনার মামাতো বেয়াই স্বপন একই আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ৯ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের মরাগাঙ এলাকা থেকে জরিনার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাবার বাড়ি সিরাজগঞ্জের চৌহালী এলাকায়। ওইদিন দুপুরে জরিনা বেগম তার বাবাকে নিয়ে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন।

পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা ৬টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে টাঙ্গাইল যাওয়ার উদ্দেশে একটি বাসে ওঠেন বাবা-মেয়ে। বাসের চালক সেখান থেকে কিছুদূর যাওয়ার পর যাত্রী তোলার কথা বলে সাভারের হেমায়েতপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর আবার সেখান থেকে ফিরে আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক হয়ে আব্দুল্লাহপুরের উদ্দেশে চালাতে থাকে।

এভাবে ঘোরাঘুরি করতে থাকায় বাসচালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের সঙ্গে জরিনা বেগম ও তার বাবার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাসটি আশুলিয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি গেলে বাসের শ্রমিকরা বৃদ্ধ আকবর আলীকে পিটিয়ে আহত করে এবং তার দেহ তল্লাশি করে সঙ্গে থাকা ৬০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তাকে চলন্ত বাস থেকে আশুলিয়া ব্রিজের নিচে ফেলে দেয় হয়।

এ ঘটনার পর বৃদ্ধ আকবর আলী মেয়েকে বাঁচাতে আশুলিয়া থানার টহল পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ মরাগাঙ এলাকায় মহাসড়কের পাশে ওই নারীর মরদেহ দেখতে পায়। পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জরিমার মেয়ের মামা শ্বশুর স্বপন, শাশুড়ি ও জামাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মূলত মেয়ে-জামাইয়ের সংসারে শাশুড়ি জরিনা খাতুনের হস্তক্ষেপের কারণে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন জামাই নূর ইসলাম।

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্কের অবনতির জন্য শাশুড়িকেই দায়ী করতেন তিনি। এ জন্যই তাকে হত্যা করা হয়।