প্রতিবন্ধী, বয়স্ক, বিধবাসহ সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজ করা পাঁচজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবছর ‘মাদার অব হিউম্যানিটি সমাজকল্যাণ পদক’ দেওয়া হবে। এ জন্য ‘মাদার অব হিউম্যানিটি সমাজকল্যাণ পদক নীতিমালা-২০১৮’-এর খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সংবাদ সম্মেলনে সভার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। তিনি বলেন, এখানে মাদার অব হিউম্যানিটি বলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বোঝানো হচ্ছে।
লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় গত বছর যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘চ্যানেল ফোর’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ অভিধায় ভূষিত করে। সেই নামেই এ জাতীয় পদক চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পদক পাওয়া প্রত্যেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম সোনায় তৈরি একটি পদক, মাদার অব হিউম্যানিটি সমাজকল্যাণ পদকের রেপ্লিকা, দুই লাখ টাকার চেক এবং সম্মাননা সনদ দেওয়া হবে। প্রতি বছর ২ জানুয়ারি ‘সমাজকল্যাণ দিবসে’ এই পদক দেওয়া হবে।
এই পদক কোন শ্রেণির হবে, জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অন্যান্য জাতীয় পুরস্কার যেমন স্বাধীনতা পদক, একুশে পদকের সমমানের হবে।
যে পাঁচ ক্ষেত্রে এই পদক দেওয়া হবে
নীতিমালা অনুযায়ী বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীদের কল্যাণ ও পুনর্বাসনে অবদান, প্রান্তিক, অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষা, আত্মনির্ভরশীলকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রতিবন্ধী ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণ, জীবনমান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, ইনক্লুসিভ শিক্ষা বাস্তবায়ন ও সামাজিক সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান, সুবিধাবঞ্চিত, আইনের সংস্পর্শে আসা, আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশু, কারামুক্ত কয়েদি, ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তিদের কল্যাণ, উন্নয়ন, পুনরেকত্রীকরণ এবং কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এমন কোনো কর্ম যা সমাজের মানুষের মেধা ও মননের বিকাশ, জীবনমান ও পরিবেশের উন্নয়ন, সমাজবদ্ধ মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও সর্বোপরি মানবকল্যাণ ও মানবতাবোধে সমাজ বা রাষ্ট্রকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করার কার্যক্রম।
জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি এবং জাতীয় পর্যায়ে মন্ত্রিসভার সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটির মাধ্যমে পদক পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করা হবে।
সায়মা ওয়াজেদকে অভিনন্দন মন্ত্রিসভার
বৈঠকে ‘ইউনেসকো-আমির জাবের আল-আহমদ আল-সাবাহ পুরস্কারের’ আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ডে দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারপারসন নির্বাচিত হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মন্ত্রিসভা।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শাহরিয়ার শহীদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে মন্ত্রিসভা।