অবৈধভাবে আমদানি বন্ধসহ চুরি ও ছিনতাই ঠেকাতে মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। সম্প্রতি বিটিআরসির সভায় এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বিটিআরসির সচিব ও মুখপাত্র সারওয়ার আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নীতিগতভাবে এ প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হয়েছে। এখন নীতিমালা প্রস্তুতসহ অন্য বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছে।
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে তিন কোটির বেশি মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি হয়েছে এবং এর প্রায় এক-চতুর্থাংশ এসেছে চোরাই পথে। এর ফলে সরকার ৮০০ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ ছাড়া বাজারে নকল এবং নিম্নমানের সেটের ছড়াছড়ি। জঙ্গি তৎপরতাসহ বিভিন্ন অপরাধ ও অসামাজিক কাজে মোবাইল ফোনের ব্যবহার চলছেই। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিটিআরসি উন্মুক্ত নিলাম পদ্ধতিতে লাইসেন্স দিয়ে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) স্থাপন ও পরিচালনা বা মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধন ব্যবস্থা চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে বিটিআরসি মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর (এমএনও), আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, কাস্টম ও এনবিআরের সঙ্গে সমন্বয় করে এবং এনইআইআরের নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। বিটিআরসির সর্বশেষ সভার বিবরণী সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বছরে গড়ে প্রায় ১৫ হাজার কোটির টাকার বেশি মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি করা হয়। এর অর্ধেকই আসে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে।
এসব অবৈধ উপায়ে আসা মোবাইল হ্যান্ডসেট দিয়েই অপরাধীরা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গি, সন্ত্রাসী ও অসামাজিক কার্যক্রম। আর ফোন বন্ধ করে দিলেই হদিস পাওয়া যায় না তাদের। তখন এই ভয়ঙ্কর অপরাধীদের ধরতে বেগ পেতে হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। তাই এ ধরনের অপরাধ রুখতে মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিআরসি। এই নিবন্ধন সম্পন্ন হলে চুরি হওয়া সেট আলাদাভাবে ডাটাবেইসে সংরক্ষিত থাকবে এবং অপারেটরদের ইআইআর (ইক্যুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার) ব্যবহার করে অ্যাকসেস কন্ট্রোল ব্যবস্থার মাধ্যমে চুরি হওয়া সেটের ব্যবহার ঠেকানো যাবে।