বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩০টি ভোটকেন্দ্রের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তদন্তকারী দল। মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) তদন্ত শেষ হয়েছে। চার সদস্যের তদন্ত কমিটি ১১ আগস্ট তাদের তদন্ত কাজ শুরু করে।
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং বিসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, এ তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ওইসব কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহণ করা হবে কিনা বা সরকারিভাবে ফল ঘোষণা করা হবে কিনা, সেসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। তদন্তকারীরা শুধু সংগৃহীত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের বিবেচনার জন্য রিপোর্ট দেবেন।
তদন্ত দলের আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব (নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-২) খোন্দকার মিজানুর রহমান মঙ্গলবার জানান, তারা রাতেই ঢাকা ফিরে যাবেন। ইতোমধ্যে তারা সহস্রাধিক ব্যক্তির সাক্ষ্য নিয়েছেন। তবে এর বাইরেও নির্বাচন কমিশনে আরও বেশ কিছু কেন্দ্রের বিষয়ে লিখিত এবং অডিও-ভিডিওসহ আরও অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। তাই সেগুলোর বিষয়েও নির্বাচন কমিশন তদন্তের সিদ্ধান্ত নিলে ঈদের ছুটির পর সেগুলোর তদন্তে তদন্ত দল আবারও বরিশাল আসতে পারে।
তিনি জানান, তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলে তারা নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেবেন। এরপর ইসি তা পর্যালেচনা করে ফলাফল বাতিল, পুনরায় ভোটগ্রহণ অথবা চূড়ান্ত ফল ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নেবে।
তদন্ত কমিটির অন্য তিন সদস্য হলেন- কমিশনের উপসচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ হোসেন, নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) শহিদ আব্দুস ছালাম, সিনিয়র সহকারী সচিব (সংস্থাপন-২) মো. শাহ আলম।
এর আগে তদন্ত শুরুর দিন ১১ আগস্ট তদন্ত দলের আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব (নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-২) খোন্দকার মিজানুর রহমান সংবাদকর্মীদের জানান, মোট ১৫টি ভোটকেন্দ্রের ফল স্থগিত এবং একটি কেন্দ্রে ভোট বন্ধ থাকার পর, প্রার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আরও ১৪টি কেন্দ্রের তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ফল ও ভোটগ্রহণ, স্থগিত কেন্দ্রগুলোসহ অন্য কেন্দ্রগুলোতে কি অনিয়ম ঘটেছিল, সে ব্যাপারে বিভিন্ন অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী চারদিনে তারা মোট ৩০টি কেন্দ্রের তদন্ত করবেন। সে সময় অনিয়মের ধরন, তার জন্য দায়দায়িত্ব কার ছিল; সেটাও তারা খতিয়ে দেখবেন।
তিনি বলেন, ‘এসব অনিয়মের তদন্তে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, ভোটকেন্দ্রের ইনচার্জসহ দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ও আনসার প্লাটুন কমান্ডারসহ রিটার্নিং কর্মকর্তার সাক্ষ্যও নেওয়া হবে। ওইসব কেন্দ্রের পোলিং এজেন্টদের বক্তব্যও আমরা নেবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘৩০টি কেন্দ্রের তদন্তের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের আমরা ডাকিনি। তবে প্রার্থীরা যদি কোনও বক্তব্য দিতে চান, তাহলে সেটা আমরা শুনবো। কোনও প্রার্থী যদি লিখিত অভিযোগও দিতে চান, তাহলে সেটাও আমরা নেবো।’