বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘনিয়ে আসার মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। তাঁদের দ্বন্দ্বের কারণে আশঙ্কা ভোট গ্রহণের দিন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। দুটি গোয়েন্দা সংস্থা সেই আশঙ্কার কথা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছে।
মেয়র প্রার্থীদের কারণে নয়, সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারণে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। পরিস্থিতির সম্ভাব্য অবনতি ঠেকাতে ১১টি ওয়ার্ডের ৩২ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ২৭ জনের দিকে বিশেষ নজর রাখার কথা বলা হয়েছে। এই ২৭ জনের মধ্যে ১৭ জন আওয়ামী লীগের, সাতজন বিএনপি এবং তিনজন জামায়াতের স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত যে ১৭ জনকে প্রার্থীকে বিশেষ নজরে রাখা হচ্ছে তাঁরা হলেন ১০ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন হাওলাদার এবং তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বি এটিএম শহিদুল্লাহ, ১১ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মজিবর রহমান এবং তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বি মারুফ আহম্মেদ জিয়া, ২৩ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার এবং নং ওয়ার্ডের এমরান চৌধুরী জামাল, ১২ নং ওয়ার্ডের জাকির হোসেন ভুলু, ১৪ নং ওয়ার্ডের তৌহিদুর রহমান ছাবিদ ও শাকিল হোসেন পলাশ, ২১ নং ওয়ার্ডের শেখ সাঈদ আহমেদ মান্না ও শাহরিয়ার সাচিব রাজীব, ২২ নং ওয়ার্ডের আনিছুর রহমান, ২৫ নং ওয়ার্ডের এম সাইদুর রহমান জাকির, ২৬ নং ওয়ার্ডের হুমায়ুন কবির ও মোহাম্মদ হাসান ইমাম ২৭ নং ওয়ার্ডের আব্দুর রশিদ হাওলাদার এবং ২৮ নং ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর হোসেন।
বিশেষ নজরে রয়েছেন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ও পর পর তিনবার নির্বাচিত দুই কাউন্সিলর প্রার্থী ১২ নং ওয়ার্ডের কেএম শহিদুল্লাহ ও ২১ নং ওয়ার্ডের আলতাফ মাহমুদ সিকদার। এ ছাড়া রয়েছেন একাধিকবার নির্বাচিত ২২ নং ওয়ার্ডের আনম সাইফুল আহসান আজিম, ২৫ নং ওয়ার্ডের জিয়া উদ্দিন সিকদার জিয়া, ২৬ নং ওয়ার্ডের ফরিদ উদ্দিন হাওলাদার, ২৭ নং ওয়ার্ডের গিয়াস উদ্দিন বাবুল মোল্লা, ২৮ নং ওয়ার্ডের হুমায়ুন কবির। জামায়াতপন্থীদের মধ্যে আছেন ১৪ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সালাউদ্দিন মাসুম, ২৩ নং ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান এবং ২৭ নং ওয়ার্ডের মনিরুজ্জামান তালুকদার।
এই প্রার্থীদের অনেকে স্বীকার করেন, তাঁদের ওয়ার্ডে প্রতিদিনই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। তাতে সাধারণ ভোটারা আতঙ্কিত হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তাঁরা একে অন্যকে দোষারোপ করেন। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এগিয়ে আসার জন্যও অনুরোধ জানান তাঁরা।
বিএনপিপন্থী কাউন্সিলর প্রার্থী কেএম শহিদুল্লাহ, আলতাফ মাহমুদ, আ ন ম সাইফুল আহসান আজিম বলেন, ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীনদের প্রার্থী প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি নিয়ে তাঁরা শঙ্কিত। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না নিলে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হবে। সেই প্রার্থীর প্রভাবে সাধারণ ভোটাররা কেন্দ্রমুখী হবে না। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো হলেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ের কারণ আছে। এ ব্যাপারে কোনো আশঙ্কা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে বলা হলে তা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করেন তাঁরা।