টিন আর প্লাস্টিকের বানানো পায়ে হাঁটে সিরীয় শরণার্থী শিশু মায়া

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago
টিন আর প্লাস্টিকের বানানো পায়ে হাঁটে সিরীয় শরণার্থী শিশু মায়া

পা ছাড়াই জন্মেছিল সিরিয়ার শরণার্থী শিশুটি। চিকিৎসক বলেছিলেন, কৃত্রিম পা লাগালে মেয়েটি হাঁটতে পারবে। তা হয়নি। অগত্যা মায়া মেহরি নামের শিশুটির পঙ্গু বাবা প্লাস্টিকের টুকরা ও টিনের কৌটা দিয়ে মেয়ের জন্য পা বানান।

দ্য ইনডিপেনডেন্টের খবরে জানা যায়, মেয়ের জন্য বাবার বানানো এই পা দেখে বিশ্ববাসীর প্রাণ কেঁদেছে।

জন্মগতভাবেই মায়ার পা ছিল না। বাবার সঙ্গে থাকে সে। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ইদলিব এলাকার একটি শরণার্থীশিবিরে মেয়েকে কোলে নিয়ে ছবি প্রকাশ করেন মায়ার বাবা। সিরিয়ায় চলা গৃহযুদ্ধের কারণে আলেপ্পো থেকে ওই পরিবারটিকে বিতাড়িত করা হয়।

হামাগুড়ি দিয়ে চলতে পারত মায়া। পা ঠিক করার জন্য তার অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু এ সময় পায়ের আঙুলগুলো ছোট করে ফেলা হয়। মায়ার বাবা মেহরি বলেন, অস্ত্রোপচারের পর থেকে মায়া আর হাঁটাচলা করতে পারছিল না। পুরো সময়টা তাঁকে শিবিরের মধ্যেই বসে কাটাতে হয়।

বাবার বানানো টিনের কৌটার পা দিয়ে হাঁটছে মায়া। ছবি: এএফপি

মেয়ের এই কষ্ট দেখে বাবার মাথায় একটি বুদ্ধি আসে। টুনা মাছের দুটি খালি টিন ও প্লাস্টিক দিয়ে কৃত্রিম পা বানান মায়ার বাবা। এই পা দিয়ে মায়া শিবির থেকে বের হতে পারে। স্কুলেও যেতে পারে।

মেহরি বলেন, ‘আমার হৃদয় ভেঙে যায় যখন বন্ধুদের সামনে আমি মায়াকে হামাগুড়ি দিতে দেখি। সে সময় অন্য বন্ধুরা তার সামনে দৌড়ায় ও খেলে।’

এই ছবি প্রকাশের পর তুর্কি রেড ক্রিসেন্ট ইস্তাম্বুলে বিশেষ একটি ক্লিনিকে মায়া ও তার বাবাকে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করে।

সেখানকার কৃত্রিম অঙ্গ বিশেষজ্ঞ মেহমেদ জেকি কুলকু বলেন, মায়া হাঁটবে। ঈশ্বরের ইচ্ছায় তিন মাসের মধ্যেই মায়া হাঁটতে পারবে।

সিরিয়ার শরণার্থীশিবিরে ৩০ লাখ মানুষ আছে। তবে তাদের বেশির ভাগের কাছেই কোনো মানবিক ত্রাণ পৌঁছায়নি। অনেকেই তুরস্ক, জর্ডান ও লেবাননে পালিয়ে গেছেন।

মেহরিবকেও তুরস্কে কৃত্রিম অঙ্গ দেওয়া হবে। তবে মেহরি বলেন, নিজের চেয়ে তার মেয়ের অস্ত্রোপচার বেশি জরুরি। যাতে মেয়ে স্বনির্ভর হতে পারে। এটা তাঁদের জন্য নতুন জীবন হবে।