বরিশাল সিটি নির্বাচন ২০১৮ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ আ’লীগ-বিএনপি

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন।

ইতোমধ্যে শীর্ষ দুই দল মেয়র পদে স্ব স্ব প্রার্থী চুড়ান্ত করেছে।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।

আর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনোনীত প্রার্থী দলের যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার।

এছাড়া ইকবাল হোসেন তাপসকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছে জাতীয় পার্টি।

তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বরিশাল সিটি নির্বাচনে বিএনপি কিংবা আ’লীগ কেউই কাউকে ছাড় দিতে নারাজ।

জয়ের ধারাবাহিকতা রক্ষার চ্যালেঞ্জ বিএনপির। আর বিএনপি দূর্গে হানা দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ আ’লীগের। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বরিশাল আ’লীগ ও বিএনপি। পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও শেখ হাসিনার সরকারের সময়ই নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হয়েছে, যা ইতোমধ্যে দৃশ্যমান।

এছাড়া কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, বিদ্যুৎসহ আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রেও সরকারের সাফল্য প্রশ্নাতীত। অতীতের দুঃসহ বিদ্যুৎ সংকট মিটিয়ে এখন প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যপূরণের পথে এগোচ্ছে সরকার। গৃহহীনদের জন্য আবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশাপাশি সমাজের অসহায় দুস্থ মানুষের কল্যাণ এবং বিধবা ও পরিত্যক্তা নারীদের জন্য নানা কল্যাণকর পদক্ষেপ প্রশংসনীয়।

এ সব কিছুই আওয়ামী লীগের বড় সাফল্য, যা জনমনে এই দলটির প্রতি প্রত্যাশাকেও বাড়িয়ে তুলেছে। এদিকে সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভক্ত আ’লীগ এখন একাট্টা। যার প্রমান মিলেছে মেয়র পদে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে সমর্থন এবং সাদিকের মনোনয়নপত্র জমাদানকালে বরিশাল জেলা ও মহানগর আ’লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি।

বরিশাল মহানগর আ’লীগের সভাপতি এ্যাড. গোলাম আবক্ষাছ চৌধুরী দুলাল বলেন, উন্নয়নের যে জয়যাত্রা সারা বাংলাদেশে আ’লীগ সরকার করেছে তা জনগণ জানে।

তাছাড়া বর্তমান নির্বাচন কিন্তু দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান মেয়রের কাজগুলো বিবেচনা করলেই আমাদের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে জনগণ নৌকায় ভোট দিবেন। তিনি বলেন, বরিশাল আ’লীগের অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর হাত ধরেই কিন্তু সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণ বিজয়ী হয়েছিলেন।

এছাড়া হিরণ সাহেব উন্নয়নমূলক কাজ করে বরিশাল নগরীতে তিলোত্তমা নগরীতে পরিনত করেছেন। আমাদের অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি ফলে এবারের সিটি নির্বাচনে আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি। আমাদের প্রার্থী জয়ী হলে প্রয়াত শওকত হোসেন হিরণের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পারব এবং সুন্দর নগর উপহার দিতে পারবো বলেন তিনি।

অপরদিকে ২০১৩ সালে বরিশালে আওয়ামী লীগের সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনকে হারিয়ে মেয়র হওয়া আহসান হাবিব কামাল নির্বাচিত হলেও এবারকার হিসাব ভিন্ন। কেননা মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ারের অকুণ্ঠ সমর্থন এবং চাঁন-কামাল-সরোয়ারের নিরবচ্ছিন্ন ঐক্যের কারণেই জয় পেয়েছিলেন কামাল।

এছাড়া কামালের বিজয়ে হেফাজত ট্রাজেডি, পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সর্বপরি আ’লীগের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব ভুমিকা রেখেছিল। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট উল্টো।

মেয়র কামাল’র সময়ে বরিশালে দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি, তাছাড়া করপোরেশন পরিচালনায় সন্তুষ্ট নন খোদ কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই। নানা সময় তাদের আন্দোলন মোকাবেলা করতে হয়েছে মেয়রকে। এই অবস্থায় নগরবাসী কতটা সন্তুষ্ট, সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। যদিও বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত বরিশাল নগরীতে সরোয়ারের একটি বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। কামাল’র কর্মকাণ্ড ঘুচিঁয়ে সরোয়ার কতটা সফল হতে পারেন তা দেখার বিষয়।

মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, বরিশাল বিএনপির ঘাঁটি। বিএনপি সব সময়ই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে বিজয় ছিনিয়ে আনে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে।

বর্তমানে আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় তাই উন্নয়ন কাজে কিছুটা সমস্যা হয়েছে।

বরিশাল বিএনপি ঐক্যবদ্ধ তাই এখানে নির্বাচনে বিএনপির জয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।