দলের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন নিজস্ব ভবন পেল দেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। শনিবার সকাল ১০টায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১০তলা ভবনটির উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে সকাল থেকে ওই এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। আবদুল গণি রোড, জিপিও চত্ত্বর, গুলিস্তান মাজারসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় জনসমাগম বন্ধ করে দেয়া হয়।
এ ভবনের উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে আপন ঠিকানায় ফিরল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতা-সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দলটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন হলেও এই প্রথমবার নিজস্ব ভবন পেল।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, দলীয় সব সাংগঠনিক কার্যক্রম বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের নতুন কার্যালয় থেকেই পরিচালিত হবে। আর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয় থেকে নির্বাচনী কার্যক্রম ও দলীয় সংস্থাগুলোর গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।
ভবনটিতে ঢুকতেই হাতের বামপাশে অভ্যর্থনা ডেস্ক রয়েছে। দশতলা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরই বিশাল। সিঁড়ির পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে দুটি লিফট। বেজমেন্ট ও প্রথম তলায় গাড়ি পার্কিংয়ের কথা থাকলেও ভবনের সামনের সড়কে নিজস্ব জায়গায় সে ব্যবস্থা করা হবে।
ভবনের নির্দেশনা অনুযায়ী, চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় রয়েছে সাধারণ অফিস, ডিজিটাল লাইব্রেরি ও মিডিয়া রুম। ষষ্ঠ তলায় সম্মেলন কক্ষ এবং সপ্তম তলায় দলের কোষাধ্যক্ষের অফিস। অষ্টম তলায় দলের সাধারণ সম্পাদকের এবং নবম তলায় রয়েছে বুলেটপ্রুফ ডাবল গ্লাসবিশিষ্ট সভাপতি অফিস। এ তলায় রয়েছে বিশ্রামাগার ও নামাজের জায়গা। এ ছাড়া সপ্তম থেকে নবম তলায় দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সম্পাদকমন্ডলীর কেন্দ্রীয় নেতাদের কক্ষ রাখা হয়েছে। থাকছে সাংবাদিক লাউঞ্জ, ভিআইপি লাউঞ্জ ও ডরমিটরিও। আর দশম তলায় রয়েছে ক্যাফেটেরিয়ার ব্যবস্থা।
এ কার্যালয়ের কর্মকর্তার আরও জানান, দ্বিতীয় তলার কনফারেন্স রুমটি ৩৫০ আসনবিশিষ্ট। আর তৃতীয় তলায় ২৪০ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। কনফারেন্স রুমের দুইপাশে বেশকিছু কক্ষও রয়েছে। তিন তলার সামনের অংশটায় রয়েছে ‘ওপেন স্কাই টেরাস’। এ ছাড়া ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় দলের মূল কার্যালয়ের পাশাপাশি অঙ্গ-সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর অফিস থাকছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার আওয়ামী লীগ প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এ নবনির্মিত ভবনের চাবি তুলে দিয়েছেন গণপূর্তমন্ত্রী ও দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন। এরপর ভবনটি উদ্ধোধন শেষে শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় নেতা ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কক্ষ বরাদ্দ করে দেন।
দলীয় সূত্র জানায়, ভবনের জন্য ৮ কাঠার জায়গাটি সরকারের কাছ থেকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎসহ অন্যান্য বকেয়া বিল হিসেবে ১ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। দলীয় ফান্ড থেকে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে।