ভেঙে গেল তাসনুভা তিশার সংসার

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago
তাসনুভা তিশা

তালাকের আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে মাসখানেক আগে। এত দিন বিষয়টি নিয়ে কিছুই বলেননি নতুন প্রজন্মের অভিনয়শিল্পী তাসনুভা তিশা। সবাই যখন ঈদ আর বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার আনন্দে মেতে আছেন, ঠিক তখনই তিশা নিজ উদ্যোগে জানালেন তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের খবর। গতকাল বৃহস্পতিবার তিশা তাঁর ফেসবুকে দেওয়া পোস্টের মধ্য দিয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিপণন ব্যবস্থাপক ফারজানুল হকের সঙ্গে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদের বিষয়টি সবাইকে জানান।

২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তাসনুভা তিশা ভালোবেসে বিয়ে করেন ফারজানুল হককে। শুরুতে গোপন থাকলেও তিশা সেই বিয়ের খবর প্রকাশ করেন পরের বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। ৪ বছরের মাথায় জানা গেল, তিশা ও ফারজানুল হকের ভালোবাসার সেই বিয়ে টিকল না। গত ২১ মে ফারজানুল হকের সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। ফারজানুল ও তিশার ঘরে একটি পুত্রসন্তান আছে। তার নাম আনুশ। জানা গেছে, আনুশ এখন আছে বাবার কাছে।

নাটকের পাশাপাশি তিশা বিজ্ঞাপনচিত্র আর গানের ভিডিওতে অভিনয় করছেন। অল্প সময়ের মধ্যে নির্মাতাদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করেন নেন তিনি। গত কয়েক বছর ঈদে তাঁর কয়েকটি নাটক প্রচারিত হয়। ছোটপর্দার আলোচিত এই অভিনয়শিল্পীকে এবার ঈদে তেমন কোনো নাটকে দেখা যায়নি। তিশা বললেন, ‘অনেকে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, এবার ঈদে কেন আমার এত কম কাজ? সবাইকে আমি কিছু সত্য বিষয় জানাতে চাই। গত ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের তালাকের আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়। তা ছাড়া গত ছয় মাস যাবৎ আমি প্রচণ্ড মানসিক কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং হাসপাতালে ভর্তি হই। চারপাশের এত সমস্যার কারণে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কাজ করা সম্ভব হয়নি। অনেক পরিচালক যোগাযোগ করেছেন ঠিকই, কিন্তু কাজ করার মতো মানসিক অবস্থা ছিল না।’

তিশার মতে, অনেকে আবার তাঁর এই নীরবতাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছেন। এই বিষয়টা তাঁকে আরও কষ্ট দিচ্ছে। বললেন, ‘কষ্টের বিষয় হচ্ছে আমার এই দুরবস্থার কারণ একেকজন একেকভাবে ভেবে নিয়ে নিজের মতো ভুল ব্যাখ্যা করেছে। তা কোনোভাবেই ঠিক না। সবাইকে বলতে চাই, একটা মেয়ের যখন সংসার ভেঙে যায়, তার মানসিক অবস্থা একবার উপলব্ধি করার চেষ্টা করবেন প্লিজ। অনেক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে সংসার শুরু করছিলাম, কিন্তু তা হয়নি। এটা কতটা কষ্টের, তা শুধু ভুক্তভোগী টের পান।’

তালাকের কারণ প্রসঙ্গে তিশা বলেন, ‘একেবারেই আমাদের নিজস্ব কিছু বিষয়ে বোঝাপড়ার সমস্যা দিনের পর দিন চলতে থাকায় বাধ্য হয়ে তালাকের মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সাবেক স্বামীর কাছে অনুরোধ, আমার ছেলে যেন তার মায়ের আদর-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সবাই আমার স্বাভাবিক মানসিক অবস্থা ফিরে পাওয়ার জন্য দোয়া করবেন।’

তিশা আরও বলেন, ‘এক বছর ধরে আমাদের দাম্পত্য জীবনে অনেক সমস্যা চলছিল। আমি মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলাম। যে কারণে ছয় মাস ধরে ঠিকমতো কোনো কাজ করতে পারিনি। দুজনের একসঙ্গে থাকা সম্ভব হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’

ফারজানুল হক বলেন, ‘আমাদের তালাকের সবকিছু আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়ে গেছে। তবে সন্তানের ব্যাপারে আমার সাবেক স্ত্রীর তালাকের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই ভাবা উচিত ছিল। তারপরও এখন যেহেতু তিনি সন্তানের আদর-ভালোবাসার অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন, তা না হলেও চলবে। দুই পরিবারের সদস্যরা মিলে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’