প্রিয় বাবা
কেমন আছো তুমি! নিশ্চয় অনেক ভালো আছো। আমরা কিন্তু ভালো নেই। কারণ আমাদের পুরো পৃথিবীটা যে তোমাকে ঘিরেই ছিলো। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে তোমার কাজ ছিলো তোমার রাজকন্যাদের রেডি করা। বাইকে করে প্রাইভেট পড়তে নিয়ে যাওয়া। স্কুলে পৌঁছে দেয়া।
জানো বাবা বাড়িতে অনেক মানুষ চাচা-চাচী,জেঠু-জেঠিমা,ফুফি-ফুফা আর বাড়ি ভর্তি কাজিনরা। সবার মাঝে তোমার ছায়া খুঁজে চলছি আমরা দুই অনাথ রাজকন্যা। বার বার রাজকন্যা বলছি কারণ তোমার চোখে আমরা রাজকন্যাই ছিলাম।
হয়তো খুব বেশী প্রাচুর্যপূর্ণ ছিলোনা আমাদের জীবন,কিন্তু কখনো কোন কিছুর অভাব তুমি বুঝতে দাওনি আমাদের। আমাদের ছোট বড় সব চাওয়া তোমার কাছে প্রাধান্য পেয়েছে সবার আগে।
সবার মুখে শুনেছি তোমার জানাজাতে প্রচুর মানুষের জমায়েত হয়েছিলো,ইসলাম ধর্মে মেয়েরা সেখানে যেতে পারেনা,তাই আমাদের দেখা হলো না স্বচক্ষে,তুমি কতটা জনপ্রিয় ছিলে সবার কাছে।
হয়তো ঈদের পর থেকে আমাদেরকে স্কুল বাস নিয়ে যাতায়াত করতে হবে। সে সময় তোমাকে অনেক মিস করবো। তোমার শরীর থেকে বাবা-বাবা একটা ঘ্রাণ আসতো, খুব মিস করবো সে ঘ্রাণ।
তোমার গানের গলা যথেষ্ট প্রশংসনীয় ছিলো,আমাদের আবদারে সব গান গেয়ে শুনাতে। মিস করবো সে দরাজ ভরা কণ্ঠের গান।
তোমার ভালো মানের চশমার প্রতি লোভ ছিলো,তোমার রেখে যাওয়া সে সব চশমা আমাদের দিকে জ্বলজ্বল করে নির্বাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
এই কিশোর বয়সে হারিয়ে ফেলবো তা কল্পনাতীত ছিলো।কিন্তু আল্লাহ্ তোমাকে নিয়ে গেলেন,হয়তো উনি তোমাকে আমাদের চাইতে বেশী ভালোবাসেন।
বাবা তোমার অসমাপ্ত স্বপ্ন আমরা পুরা করবো,তোমার দেখিয়ে দেওয়া পথে আমরা আজীবন চলবো।
তোমাকে কথা দিলাম,আমরা তোমার সত্যিকার রাজকন্যা হয়ে তোমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। ওপারে অনেক ভালো থেকো বাবা।
— তোমার রাজকন্যাদ্বয়
তাহিয়াদ/নাহিয়ান।।