আগামী ১০ জুনের মধ্যে শ্রমিকদের মে মাসের বেতন ও উৎসব ভাতা (বোনাস) পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। রোববার সচিবালয়ে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ বা ১৭ জুন দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ৭ জুনের মধ্যে শ্রমিকদের মে মাসের বেতন পরিশোধ ও ১০ জুনের মধ্যে উৎসব ভাতা দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। আমাদের প্রেসিডেন্ট সাহেবরাও (মালিক সংগঠনগুলোর) বলে গেছেন তারা এটা সময়মতো পরিশোধ করে দেবেন।’
পোশাক কারখানায় ১৩, ১৪ ও ১৫ জুন পর্যায়ক্রমে ছুটি দেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মহাসড়কে যানজটের তীব্রতা কমানোর জন্য আমরা এই রিকোয়েস্টটা করেছি। বিজেএমইএ ও বিকেএমইএ আমাদের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। যদিও তারা বলেছেন, জুন-জুলাই মাসটা হলো তাদের সিজন। তারপরও চেষ্টা করবেন যাতে ছুটিটা ভাগে ভাগে দেয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘গার্মেন্টের বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা সমাধানের জন্য বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, শ্রম মন্ত্রণালয়, জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে বিশেষ আলোচনা হয়েছে। এটা ক্রাইসিস মোমেন্টের জন্য, ঈদের আগের কয়েক দিনের জন্য।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘রাজধানীসহ সারাদেশের বড় ঈদের জামাতগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসব। আর্চওয়ে মেটাল ডিটেক্টর ও চেকপোস্টের ব্যবস্থা থাকবে।’
মার্কেটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষ করে স্বর্ণের দোকানে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বড় মার্কেটগুলোতে যাতে জাল টাকা লেনদেন না হয় সেজন্য মেশিন সরবরাহ করা হচ্ছে।’
অজ্ঞান বা মলম পার্টি, ছিনতাই প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পহেলা রমজান থেকে ৭২ জন অজ্ঞান পার্টির সদস্য ও ৩৬ জন ছিনতাইকারী ধরা হয়েছে। ঢাকার প্রবেশ ও বহির্গমন পথে যানজট রোধে প্রচেষ্টা থাকবে। মহাসড়কেও যানজট নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাঁচপুর ও চন্দ্রা এলাকায় পুলিশ কন্ট্রোল রুম থাহাসড়কে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে আনসার নিয়োগ করা হবে। পবিত্র ঈদে নাশকতা রোধে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হবে।’
বাস, লঞ্চ ও ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা যাবে না জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘টিকিট কালোবাজারি নিয়ন্ত্রণে গোয়েন্দা তৎপরতা থাকবে। রাস্তায় চাঁদাবাজি রোধে হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে জেলা পুলিশ ও র্যাবের টহল থাকবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘১৪ জুন সরকারি ছুটির দিন। ওই দিন যাতে শিল্প এলাকাগুলোতে যেখানে গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি ও অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে ও মার্কেট রয়েছে সেসব এলাকায় ব্যাংক খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হবে।’
সভায় জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পটোয়ারী, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, বিজিএমইএ’র (তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।