খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এবং বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবিকে বহু দূরে ঠেলে দিয়ে তৃতীয় হয়েছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
খুলনায় সিটি করপোরশন নির্বাচনে এর আগে মেয়র পদে অংশ নেয়নি ইসলামী আন্দোলন। এবার ধর্মভিত্তিক এই দলটির মেয়র প্রার্থী মোজাম্মিল হক মঙ্গলবারের নির্বাচনে ১৪ হাজার ৩৬৩ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
গত কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পেয়ে আসছে। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে না পারলেও প্রতিষ্ঠিত এবং আলোচিত অনেক দলের চেয়েই তারা বেশি ভোট পাচ্ছে।
গত ডিসেম্বরে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও ইসলামী আন্দোলন ২৪ হাজার ৬ ভোট পেয়ে চমক তৈরি করে। ওই নির্বাচনে বিএনপি ভোট পায় ৩৫ হাজারের মতো।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান লাভ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটির মনোনীত প্রার্থী মুফতি মাছুম বিল্লাহ হাতপাখা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছিলেন ১৩ হাজার ৯১৪ ভোট।
খুলনার ভোটের অংকে অবশ্য সন্তুষ্ট নন মোজাম্মিল। তিনি বলেন, ‘আমি খুশি না। অনেক কম ভোট পেয়েছি। আরও বেশি ভোট পাওয়ার কথা ছিল।’
কেন তাহলে কম ভোট পেয়েছেন-জানতে চাইলে মোজাম্মিল বলেন, ‘অসংখ্য মানুষ লোক যেতে পারেনি। ভয়-ভীতি, গ্যাঞ্জামের কারণে আমার অনেক ভোটার কেন্দ্রে যায়নি। গেলে আরও অনেক ভোট পেতাম।’
এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক নৌকা প্রতীক নিয়ে এক লাখ ৭৬ হাজার ৯০২ ভোট পেয়ে জিতেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ধানের শীষ নিয়ে পেয়েছেন এক লাখ আট হাজার ৯৬৫ ভোট।
অপর দুই প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির শফিকুর রহমান মুশফিক লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে এক এক হাজার ৭২ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন।
২০১৩ সালের মেয়র নির্বাচনে জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম মধু ভোট পেয়েছিলেন সাড়ে তিন হাজারের ওপরে। মুশফিকের দাবি, তিনি দলের সব অংশের সমর্থন পাননি। ওই অংশটি আওয়ামী লীগের খালেকের পক্ষে কাজ করেছে।
ভোটে হারলেও নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। বলেছেন, কিছু কেন্দ্রে গোলযোগ নিয়ে বিএনপি বিভ্রান্তি ছড়ানোয় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়োয় ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। নইলে তিনিও আরও বেশি ভোট পেতেন।
এই নির্বাচনে সবার তলানিতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির মিজানুর রহমান বাবু কাস্তে প্রতীক নিয়ে ৫৩৪ জনের সমর্থন পেয়েছেন।
প্রায় পাঁচ লাখ ভোটারের মধ্যে আলোচিত এবং গণমাধ্যমে গুরুত্ব পাওয়া দলটির এই পরিণতি কেন, সে বিষয়ে মিজানুর রহমানের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন বন্ধ রেখেছেন।