পরমাণু চুক্তি নিয়ে ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের উদ্যোগ

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসবার পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের তিন দেশ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইরানের প্রতিনিধির সঙ্গে আগামী সোমবার জরুরি বৈঠকে বসবেন। বৈঠকের বিষয়টি জানিয়ে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইয়েভস ল ড্রিয়ান জানিয়েছেন, ‘এই চুক্তি কার্যকারিতা হারাইনি বা অসাড় হয়ে যায়নি। চুক্তিটি থেকে কেবল আমেরিকা বেরিয়ে গেছে তবে চুক্তিটি বহাল রয়েছে। আমরা সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করব।’

ইতিপূর্বে পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার কারণে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এক বিবৃতিতে ইরানকে পরমাণু চুক্তিটি মেনে চলবার এবং ইরানকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার কথা জানান। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মগেরিনি জানিয়েছেন অনেক চেষ্টা করে পরমাণু যুদ্ধের উত্তেজনা হ্রাস করতে এই চুক্তিটি করা হয়েছে। তাই এ চুক্তি ভাঙার প্রশ্নই আসে না। ইরান চুক্তির শর্ত মেনে চললে ইইউর সহযোগিতা আরও বাড়বে বলে তিনি জানিয়েছেন।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশ সমূহ চীন, রাশিয়া, জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘ আলোচনার পর সম্পূর্ণ হয়েছিল। চুক্তির পর পরই ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অনেক দেশ ইরানের ওপর অর্পিত নানা অর্থনৈতিক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ ঘোষণার বিরোধিতা ও তীব্র সমালোচনা করছেন ইউরোপের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা সমূহ।
জুরিখের নয়ে জুরিখের যাইটুং লিখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অচিরেই আর একটি স্থিতিশীল দেশ হিসেবে পরিগণিত হবে না। যে মুহূর্তে দেশটি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে পরমাণুবিষয়ক চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন, সেই মুহূর্তে ইরানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দেওয়াই-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাস যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ফ্রান্সের রক্ষণশীল পত্রিকা ল্য ফিগ্রো লিখেছে এ পরমাণু চুক্তি বাতিলের কারণে ভবিষ্যতে ইরান ও ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত বাড়বে বা দেশ দুটি পাল্লা দিয়ে বেশি করে পরমাণু অস্ত্র বানাবে। ল্য মন্টাগনে লিখেছে দুই সপ্তাহ আগে আমাদের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁর ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরমাণু চুক্তি বিষয়ে আলোচনা করলেও ট্রাম্প তার কথার ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। জার্মানির টাজ লিখেছে ট্রাম্পের এই অযাচিত সিদ্ধান্ত ও যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরির কৌশলের বিরুদ্ধে ইউরোপকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ডের স্পিগেল লিখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় তার অতীত যুদ্ধবাজ কৌশলে ফিরে গেছে আর ইরান নিয়ে এ চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত আগুন নিয়ে খেলার শামিল।