ম্যাথমেটিকস টুর্নামেন্টে প্রথম বাংলাদেশি অনারেবল মেনশন পেল ফাতিহা আয়াত

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

ন্যাশনাল ম্যাথমেটিকস পেন্টাথলন অ্যাকাডেমিক টুর্নামেন্টে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অনারেবল মেনশন খেতাব জয় করে নিয়েছে ফাতিহা আয়াত।

ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ইন্ডিয়ানাপলিসের সাউথপোর্ট হাইস্কুলে প্রায় ১৫০ প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় ন্যাশনাল ম্যাথমেটিকস পেন্টাথলন অ্যাকাডেমিক টুর্নামেন্ট ২০১৮। এই প্রতিযোগিতার পাঁচটি ইভেন্টে অংশ নিয়ে তিনটিতে বিজয়ী হয়ে ১১ পয়েন্ট পেয়ে প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি হিসেবে ‘অনারেবল মেনশন’ জয় করে নেয় নিউইয়র্কের গিফটেড ও ট্যালেন্টেড প্রোগ্রামের গ্রেড ওয়ানের শিক্ষার্থী ফাতিহা আয়াত। তার বয়স ছয় বছর।  প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য কিন্ডারগার্টেন ও গ্রেড ওয়ানের প্রতিযোগীদের নিয়ে যে গ্রুপিং করা হয় তার নাম ডিভিশন ওয়ান। ডিভিশন ওয়ানে যে ৫টি ইভেন্টে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় সেগুলো হল—কাল্লা, স্টার ট্রেক, হেক্সাগন, শেইপ আপ এবং কিংস অ্যান্ড কোয়াড্রাফ্যাগেস।

এই ইভেন্টগুলোতে যে গাণিতিক দক্ষতার পরীক্ষা নেওয়া হয় তা হলো—স্পেশাল ভিজুয়ালাইজেশন, এস্টিমেশন, ম্যাজারমেন্ট, ফ্রাকশন, অ্যাট্রিবিউটস, ডিরেকশনালিটি, নাম্বার সেন্স, ইনইক্যুয়ালিটি, ম্যাপিং, নিউমেরাল-পেন্টাগ্রাম ল্যান্ডিং, ডিডাক্টিভ-ইন্ডাক্টিভ থিঙ্কিং, প্রব্যাবিলিটি, কম্বিনেটরিক্স, টপলজি অব ওপেন অ্যান্ড ক্লোজড রিজিয়ন, হরিজন্টাল-ভার্টিক্যাল-ডায়াগনাল মুভমেন্ট, সিমেট্রি ও রিফ্লেকশনস, স্ট্রাকচারাল অ্যানালাইসিস অব স্পেস, কনগ্রুয়েন্স, সিমিলারিটি এবং ট্রান্সফরমেশনাল জিওমেট্রি। গাণিতিক এই বিষয়গুলো ছাড়াও একজন প্রতিযোগীকে জয়ী হতে হলে একই সঙ্গে অবজারভেশন, ক্ল্যাসিফিকেশন, কমিউনিকেশন, প্যাটার্নিং, হাইপোথেসাইজিং এবং এক্সপেরিমেন্টেশন এর মতো মানসিক বিষয়গুলোতেও দক্ষতা দেখাতে হয়।

ফাতিহা আয়াতের প্রথম ইভেন্ট ছিল কাল্লা। তার প্রতিযোগী ছিল পেনসিলভানিয়া থেকে আসা আরেক খুদে শিক্ষার্থী ড্যানিয়েলা। এই ইভেন্টে হেরে যায় ফাতিহা। পরের ইভেন্ট স্টার ট্রেকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী টেনেসি অঙ্গরাজ্যের কেলভিন। এবারও ফাতিহা হেরে যায়। এরপরই শুরু হলো বিজয়ের আনন্দ। একের পর এক হেক্সাগন, শেইপ আপ এবং কিংস অ্যান্ড কোয়াড্রাফ্যাগেস রাউন্ডে মিশিগানের অ্যাক্সেল, জর্জিয়ার সোফিয়া আর ম্যাসাচুসেটসের আড্রিয়ানোকে হারিয়ে দর্শকদের প্রবল করতালি ও হর্ষধ্বনির মাঝে গ্যালারিতে ছুটে আসে ফাতিহা।

পুরস্কার বিতরণী পর্বে অনুষ্ঠানের পরিচালক ডেভিড হিউজ বলেন, নিউইয়র্ক থেকে এ বছর একমাত্র প্রতিযোগী ছিল ফাতিহা আয়াত। নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ফাতিহা বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে মঞ্চে ওঠে পুরস্কার গ্রহণ করে।

পরিচালক ফাতিহার কাছে জানতে চান—এটাতো আন্তর্জাতিক ইভেন্ট না, যুক্তরাষ্ট্রের সবগুলো রাজ্যের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় ইভেন্ট, তাহলে ফাতিহা কেন ওর নিজের দেশের পতাকা বহন করছে। ফাতিহা উত্তরে জানায়, বাংলাদেশি কেউ যেহেতু আগে কখনো এই প্রতিযোগিতায় ‘অনারেবল মেনশন’ জেতেনি, তাই ও নিজের এই অর্জনকে দেশের সবার অর্জন বলে মনে করছে। এই পুরস্কার বাংলাদেশের সব গণিতপ্রেমী শিক্ষার্থীদের উৎসর্গ করেছে সে। ফাতিহার এই জবাব শুনে গ্যালারিতে উপস্থিত সবাই দাঁড়িয়ে করতালি দেওয়া শুরু করে।