সাংবাদিক হত্যার দায়ে গ্যাংস্টার ‘ছোটা রাজনের’ যাবজ্জীবন

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

ভারতে সাংবাদিক জ্যোতির্ময় দে হত্যার দায়ে গ্যাংস্টার ‘ছোটা রাজনের’ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। মুম্বাইয়ের এক আদালত বুধবার এ রায় দেন। জ্যোতির্ময়কে হত্যার ঘটনায় আরও আটজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে প্রমাণের অভাবে খালাস পেয়েছেন সাবেক সাংবাদিক জিগনা ভোড়া।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, প্রায় সাত বছর পর আলোচিত এই হত্যা মামলার রায় দিলেন আদালত। স্থানীয় ‘মিডডে ইভনিংগার’ নামের একটি পত্রিকায় কাজ করতেন তিনি। ৫৬ বছর বয়সী এই সাংবাদিক ২০ জন গ্যাংস্টারকে নিয়ে একটি বই লেখার পরিকল্পনা করছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ২০১১ সালের জুন মাসে দিনদুপুরে প্রকাশ্যে গুলি করে জ্যোতির্ময়কে হত্যা করা হয়।

পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্যোতির্ময় দে-কে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন গ্যাংস্টার ছোটা রাজন। বইয়ে ছোটা রাজনকে একজন ছোট অপরাধী হিসেবে উল্লেখ করায় জ্যোতির্ময়কে হত্যা করা হয়। অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবে দারুণ সুনাম ছিল জ্যোতির্ময় দের।

২০১৫ সালের নভেম্বরে ছোটা রাজনকে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ থেকে ভারতে নেওয়া হয়। বর্তমানে দিল্লির তিহার জেলে আছেন এই গ্যাংস্টার। ছোটা রাজনের প্রকৃত নাম রাজেন্দ্র এস নিখালজে। হত্যার তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, জ্যোতির্ময়কে হত্যার জন্য ৫ লাখ রুপির বিনিময়ে একজন খুনিকে ভাড়া করা হয়েছিল। সতীশ কালিয়া নামের ওই খুনিকে জ্যোতির্ময়ের পরিচয় জানানো হয়নি। সতীশসহ মোট সাতজনের একটি দল পরিকল্পিতভাবে জ্যোতির্ময়কে খুন করে। আদালত সতীশকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, মুম্বাইয়ে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় একটি বাজারে জ্যোতির্ময় দে-কে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও পাওয়া গিয়েছিল। দোষী সাব্যস্ত সতীশ কালিয়া সাংবাদিক জ্যোতির্ময়কে লক্ষ্য করে মোট পাঁচটি গুলি করেন। হত্যাকাণ্ডে রিভলবার ব্যবহার করা হয়। এরপর আহত সাংবাদিককে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

পুলিশ বলছে, সাংবাদিকের মৃত্যুর পর টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্রিকায় তাঁর পরিচয় জানতে পেরে ভাড়াটে খুনিরা মুম্বাই ছেড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার তিন মাস পর তদন্ত নেয় নতুন মোড়। ওই সময় জ্যোতির্ময় দে-কে হত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মুম্বাইয়ের আরেক সাংবাদিক জিগনা ভোড়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিগনা তখন ‘দ্য এশিয়ান এজ’ পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন।

পুলিশের অভিযোগ ছিল, পেশাগত ঈর্ষার কারণে জ্যোতির্ময়কে হত্যা করতে ছোটা রাজনকে প্ররোচনা দিয়েছিলেন জিগনা ভোড়া। তিনি নাকি সন্ত্রাসীদের জ্যোতির্ময়ের বাড়ির ঠিকানা ও মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট চিনতে সহায়তা করেছিলেন।

তবে জিগনা ভোড়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, পেশাগত কারণে ছোটা রাজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন তিনি। রাজনের সাক্ষাৎকার নেওয়াই তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল। পরে আদালত জিগনাকে জামিন দেন।