রাস্তায় ঘুমান অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক!

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

৭৬ বছরের রাজা সিংয়ের রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া স্নাতক ডিগ্রি। এক সময় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকও ছিলেন বলে দাবি তার। সেই মর্যাদাশালী ব্যক্তির ঠাঁই এখন রাস্তায়।

ছেলেদের কাছে স্থান না পেয়ে নয়া দিল্লির রেল স্টেশনে প্রায় চার দশক ধরে বসবাস করছেন তিনি। এতোদিন অনাহারে অর্ধাহারে সেখানে দিন পার করলেও অবশেষে তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম! একটি বৃদ্ধাশ্রমে জায়গা হয়েছে তার।

২১ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রাজা সিংয়ের বিমর্ষ জীবন নিয়ে একটি পোস্ট ভাইরাল হয় ভারতে। দিল্লির বাসিন্দা অবিনাশ সিংয়ের ফেসবুক আইডিতে করা পোস্টে বলা হয়, ১৯৬০’র দশকে ভাইয়ের ওপর ভরসা করে তিনি ভারতে চলে এসেছিলেন। একসঙ্গে দুইভাই মুম্বাইয়ে মোটর পার্টস’র ব্যবসাও করতেন। কিন্তু তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর নিজের দুই ছেলের কাছে স্থান না পেয়ে চার দশক ধরে তিনি রাস্তায় বাস করছেন। তাকে সাহায্য করতে হৃদয়বানরা এগিয়ে আসুন।

রাজা সিং বলেন, আমি কঠোর পরিশ্রম করে আমার দুই ছেলেকে বিদেশে লেখাপড়া করতে পাঠিয়েছিলাম। এমনকি ঋণও নিয়েছিলাম তাদের জন্য। আজ তারা বিদেশি স্ত্রী নিয়ে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত। আর তাদের বাবার এখন রাজধানীর রাস্তায় রাস্তায় দিন কাটায়। বাবার জন্য তাদের সময় নেই।

রাজা সিং রাজধানীর একটি ভিসা সেন্টারে মানুষকে দেশের বাইরে যাওয়ার ফরম পূরণ করে দেন। সেখানে তিনি ফরম পূরণ ও বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতা করে দিনে গড়ে ১০০ রুপি উপার্জন করেন। তবে কোনো কোনো দিন অবশ্য একটি রুপিও জোটে না তার। যেদিন কাজ না জোটে সেদিন তাকে গুরুদোয়ারের ধর্মীয় লঙ্গরখানায় যেতে হয় দু’মুঠো বিনামূল্যের খাবারের জন্য।

অবিনাশ উল্লেখ করেন, রাজা সিং খুব দৃঢ়। তিনি জীবনকে ‘গুরু ঘর’এ সম্পৃক্ত করেছেন। তিনি উপার্জন করেন নিজের খাদ্যের জন্য। বেশি উপার্জন করলে লঙ্গরখানায় দান করেন। আবার যখন কোনো কাজ না থাকে তখন লঙ্গরখানায় গিয়ে খেতেও হয় তাকে। তার কোনো অনুতাপ নেই ছেলেদের হারিয়ে। কারো সাহায্য নেওয়ার ইচ্ছা তার ছিল না। কিন্তু এখন অসুস্থতার কারণে তিনি একটি চাকরি চান।

পাঁচ হাজারেরও বেশি শেয়ার হওয়া অবিনাশের ওই পোস্টটি নজর কাড়ে হৃদয়বানদের। দিল্লির একটি বৃদ্ধাশ্রমে জায়গা হয়েছে তার।