বরিশালের কৃতি সন্তান আলামিনের ব্যস্ততার দিনরাত্রি

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

উনূসকে চেনেন তো? ওই যে রবির বিজ্ঞাপনের মজার ছেলেটা! ফ্যান ছাড়তে গিয়ে লাইট বন্ধ করে দেন। ঠিক তাই। দর্শকের কাছে ইউনূস নামে পরিচিত হলেও তার নাম পারিবারিক নাম আলামিন দূররানী। রবির বিজ্ঞাপনটি তাকে দিয়েছিলো রাতারাতি জনপ্রিয়তা।

এরপর বেশ কিছু বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছেন। তবে বেশি অভিনয় করেছেন নাটকে। একক ধারাবাহিক মিলিয়ে তার অভিনীত নাটকের সংখ্যা প্রায় একশ ছাড়িয়েছে।

তার জনপ্রিয়তার গল্পটা তো সবার জানা। কিন্তু তার জনপ্রিয়তার পেছনের গল্পটা। মঙ্গলবার অফিসে এসেছিলেন এই অভিনেতা। শোনালেন তার অভিনয় ক্যারিয়ারের নানা গল্প।

জনপ্রিয় নির্মাতা মুস্তফা সরয়ার ফারুকীর ছবিয়ালের অ্যাকাউন্ট সহকারী ও প্রডাকশন ম্যানেজারের সহকারি হিসেবে ২০০৬ সালে সাথে যুক্ত হন আলামিন। রবি তখন অ্যাকটেল নামেই পরিচিত। আলামিনের ভাষায়, ‘অ্যাকটেলের সঙ্গে ফারুকী বসের মিটিং হয়েছে। ভাই বিজ্ঞাপন নির্মাণ করবেন। একেবারেই নতুন একটি ছেলেছে কাস্ট করতে চান। আমরা একটা ডামি তৈরি করলাম। এখানে আমি ও পল্লব বিশ্বাস ভাই মডেল হই। এরপর ভোটিং হলো আমাদের টিমে। পল্লব ভাই ৮ ভোট পেলেন আর আমি ১ ভোট। কিন্তু আমাকে পছন্দ করেন অ্যাকটেলের কর্মকর্তারা। এর পরেরটা সবার জানা। দর্শকের অনেক ভালোবাসা পেয়ে আসছি তার পর থেকে।’

ইউনূস চরিত্রের বিজ্ঞাপন ছাড়াও বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপন চিত্রে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পান আল-আমিন। এর মধ্যে কনফিডেন্স লবণ, একটেল, বিলট্রেন্ট টিন, শার্ক এনার্জিং ড্রিংক, স্প্রিন্ট মোবাইল, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ক্রাউন সিমেন্ট, যমুনা-বসুন্ধরা গ্রুপ, রবি দেখিয়ে দাও বাংলাদেশ অন্যতম। সবকয়টি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নির্দেশনায়।

বিজ্ঞাপন তাকে অনেকে জনপ্রিয় করে তুলেছে যেমন, তেমন নাটকে অভিনয় করেও প্রসংশিত হয়েছেন অনেক। অভিনয়ের শুরুটা হয়েছে নাটক দিয়েই। প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ২০০৬ সালের নভেম্বর মাসে। আশফাক নিপুনের পরিচালনায় ‘মায়া’ নামের একটি নাটকে অভিনয় করেন। এখানে একটি এতিম ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেন আলামিন। নাটকটিতে একজন প্রখ্যাত লেখিকার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দীপা খন্দকাল। ২০০৭ সালে জানুয়ারিতে চ্যানেল আই প্রচার করে নাটকটি।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘ক্যারাম’, ‘ওয়েটিং রুম’, ‘৪২০’ নাটকেও অভিনয় করেন আলামিন। তার অভিনীত আলোচিত নাটকগুলোর মধ্যে আছে, আশফাক নিপুনের ‘মুকিম ব্রাদারস’, মাসুদ সেজানের ‘চলিতেছে সার্কাস’, ‘রেড সিগন্যাল’। বর্তমানে প্রচারিত হচ্ছে মাসুদ সেজান পরিচালিত ‘ডুগডুগি’ ও রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘রেডিও চকলেট’ নামের দুটি ধারাবাহিক। এরই মধ্যে ঈদের দুটি একক নাটকে অভিনয় করেছেন আলামিন। এর মধ্যে আছে শুভ খানের ‘গোল্লাছুট’ ও সেতু আরিফের ‘সব প্রেমের দ্বিতীয় গল্প’।

ভবিষ্যাত পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে আলামিন দূররানী বলেন, ‘অভিনয়টা নিয়মিত করতে চাই। নাটকের পাশাপাশি ভালো গল্পের রুচিশীল সিনেমাতে অভিনয় করারও ইচ্ছে আছে।’

প্রসঙ্গত, ১৯৮৭ সালের ১৫ জুলাই বরিশালের মুলাদি উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন আলামিন। তার বাবার নাম ইস্কান্দার আলী দূররানী ও মা মনিয়ারা বেগম। জেলার বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে এসএসসি ও মুলাদি ডিগ্রী কলেজ থেকে ২০০৫ সালে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর অভিনয়ের নেশায় ঢাকা ছুটে আসেন। তার পর থেকেই ছুটে চলেছে তার অভিনেতা হওয়ার স্বপ্নের রেল গাড়িটা।