টেকসই উন্নয়নে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। বর্তমান সরকার মানুষের ভাগ্য পরির্তনে ১০টি বড় কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে সত্যিকারের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে। এজন্য প্রয়োজন প্রশাসনিক দক্ষতা। এরই অংশ হিসাবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জন্য দেশে-বিদেশে পিএইচডি, মাস্টার্স ও অন্যান্য কোর্স এবং প্রশিক্ষণ প্রদানে ফেলোশিপ দেয়া হবে। এই ফেলোশিপের নাম দেয়া হয়েছে ‘শেখ হাসিনা ফেলোশিপ’। নেয়া হয়েছে আলাদা প্রকল্প। এতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪১০ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সভায় ১৫ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১৬টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয় বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ফেলোশিপ প্রকল্পের আওতায় ১২৫ জন কর্মকর্তা পিএইচডি, ২৫০ জন মাস্টার্স, ৬৭ জন পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা করার সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে দেশের বাইরে ১৬০ জন, দেশের ভেতরে ৭২০ জন এসব কোর্সের সুযোগ পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আওতায় গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট কর্তৃক ২০২২ সাল নাগাদ এটি বাস্তবায়ন হবে।
দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য ৬৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইন স্থাপন করছে সরকার। এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজের ভারি মালামাল নিরাপদে ও দ্রুত প্রকল্প এলাকায় পৌঁছাতে পাবনার ঈশ্বরদীতে নতুন রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে নেয়া এই দু’টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ১১ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা ব্যয় করবে সরকার। ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ইভাকুয়েশনের জন্য সঞ্চালন অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পে ১০ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। অন্যদিকে ৩৩৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সিগন্যালিংসহ রেললাইন নির্মাণ ও সংস্কার’ প্রকল্পে। প্রকল্প দু’টি একনেক সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।
মন্ত্রী আরও জানান, শুধু রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত মালবাহী ট্রেন সার্ভিস চালুর জন্য নতুন করে ২২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হবে। এর মধ্যে ব্রডগেজ থেকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর করা হবে ১৭ দশমিক ৫২ কিলোমিটার। এ বিষয়েও নতুন একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে।
১৬টি প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে জিওবি ৫ হাজার ৭০৭ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ১ হাজার ২৩৫ কোটি ৭ লক্ষ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৮ হাজার ৭৪০ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।
একনেক সভায় কয়েকজন মন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।