সালমানের মুক্তি নিয়ে আশঙ্কা!

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

যোধপুরে দায়রা আদালতে আজ শনিবার সময় সকাল সাড়ে ১০টায় সালমান খানের জামিনের আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে। এদিকে এই বলিউড তারকার জামিনে মুক্তি পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এই মামলার সংশ্লিষ্ট বিচারক রবীন্দ্র কুমার যোশি হঠাৎ বদলি হওয়ায় এই জটিলতা তৈরি হয়। জানা গেছে, পরবর্তী বিচারকের দায়িত্ব বুঝে না নেওয়া পর্যন্ত সালমান খানের জামিন আবেদনের কোনো সুরাহা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ সময় তাঁকে কারাগারেই থাকতে হবে। এরই মধ্যে রাজস্থানের হাইকোর্টের নির্দেশে আরও ৮৬ জন বিচারককে বদলি করা হয়েছে। আজ শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত আছেন সালমান খানের বোন আলভিরা ও দেহরক্ষী শেরা।

আরও জানা গেছে, বিচারক রবীন্দ্র কুমার যোশির জায়গায় আসছেন বিচারক চন্দ্র কুমার সোনাগরা। কিন্তু তিনি আজ কাজে যোগ দেবেন কি না, তা কেউ নিশ্চিত নন। আর বিচারক না থাকলে নতুন সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন না আসা পর্যন্ত সালমান খানকে কারাগারেই থাকতে হবে। এদিকে আইন বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বিচারক না থাকার কারণ দেখিয়ে অন্য এজলাসে নিয়ে যাওয়া হতে পারে সালমান খানের মামলা।

এরই মধ্যে যোধপুর সেন্ট্রাল জেলে পরপর দুই রাত থেকেছেন সালমান খান। সেখানে কুলার খাটিয়া ও চারটি কম্বল দেওয়া হয় তাঁকে। সালমান খান উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে তাঁর রক্তচাপ বেড়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পর রক্তচাপ কমানোর জন্য আদালতে সালমানকে ওষুধ খেতে দেখা যায়। কারাগারে ঢোকার পর থেকেই তাঁর শরীর খারাপ হতে শুরু করে। রাতে রুটি, ছোলার ডাল কিংবা বাঁধাকপির তরকারি দেওয়া হলেও কিছুই খাননি সালমান। গতকাল সকালেও চা, ডালিয়া কিংবা খিচুড়ি খাননি। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ছয়টায় শুধু চা আর গ্লুকোজ বিস্কুট খান তিনি। এরপর দুধের জন্য আবেদন করেন।

আগেই জানানো হয়েছে, সালমান খানকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভারতের রাজস্থান রাজ্যের যোধপুরের একটি আদালত। পাশাপাশি তাঁকে ১০ হাজার রুপি জরিমানা করা হয়েছে। তাঁকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের ৫১ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ২০ বছর আগের কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলার রায় হলো আজ বৃহস্পতিবার সকালে। এই মামলায় অন্য তিন অভিযুক্ত সাইফ আলী খান, টাবু ও সোনালী বেন্দ্রেকে আদালত বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

বলিউডে সালমান খানকে বলা হয় ‘হিট মেশিন’। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজস্থানের যোধপুর আদালতে সেই সালমান খানকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেওয়ায় থমকে গেছে বলিউড। অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন অনেক চিত্র প্রযোজক। কারণ, এরই মধ্যে এক হাজার কোটি রুপির বেশি লগ্নি করা হয়েছে এই নায়ককে ঘিরে।

এদিকে রায় হওয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে সালমান খানের আইনজীবী এইচ এম সারস্বত দাবি করেন, সরকারি কৌঁসুলি অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারেননি। মামলা সাজাতে ভুয়া সাক্ষী দাঁড় করিয়েছেন। এমনকি বন্দুকের গুলিতেই যে কৃষ্ণসার দুটির মৃত্যু হয়েছিল, তা-ও সরকারি কৌঁসুলি প্রমাণ করতে পারেননি। গত ২৮ মার্চ নিম্ন আদালতে কৃষ্ণসার মামলার চূড়ান্ত পর্যায়ের শুনানি শেষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের দাবি, ১৯৯৮ সালের ১ ও ২ অক্টোবর যোধপুরে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শুটিংয়ের মাঝে আলাদা আলাদা জায়গায় দুটি কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা করেন সালমান খান। ওই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সাইফ আলী খান, নীলম, টাবু ও সোনালী বেন্দ্রে।

রাজস্থানের যোধপুরের কঙ্কানি এলাকায় গ্রামের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অধিবাসীদের অভিযোগ, গুলির শব্দ শুনে তাঁরা সালমানের জিপসি গাড়িটি ধাওয়া করেন। কিন্তু তাঁদের ধরা যায়নি। ওই সময় চালকের আসনে ছিলেন সালমান খান। গ্রামবাসীর দাবি, প্রবল গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে সালমান খান আর তাঁর সঙ্গীরা পালিয়ে যান।

বেআইনিভাবে জঙ্গলে ঢোকার অভিযোগে সালমান খান আর অন্য তিন তারকার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৯ নম্বর ধারায় মামলা এখনো চলছে।