বিএনপির চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনে অংশ নেবে দলটি।
রোববার রাতে দলের সিনিয়র নেতাদের এক যৌথ সভা শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখার জন্য, জনগণের অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ সৃষ্টির জন্য এই নির্বাচনে আন্দোলনের অংশ হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।
বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় গুলশানে সন্ধ্যা ৭টায় বৈঠক শুরু হয়ে রাত নয়টা পর্যন্ত চলে। বৈঠকে দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছাড়াও খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে আলোচনা করেন সিনিয়র নেতারা।
বৈঠকের শুরুতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভিডিও বার্তায় নেতাদের উদ্দেশ্যে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। তার বক্তব্যের পরপরই নেতারা নিজেদের মতো করে আলোচনা শুরু করেন।
বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা খালেদা জিয়াকে আজকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক রাখা হয়েছে। তার মুক্তি আন্দোলনকে আরও বেগবান করবার জন্যে এই নির্বাচনকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নেবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এসময় এই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, তারা মনে করেন যে- বর্তমানে দেশে নির্বাচন করবার মতো কোনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। সেক্ষেত্রে এই নির্বাচন কতটুকু কার্যকরী হবে এবং সেটা কতটুকু বিরোধী দলকে করতে দেওয়া হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
দুই সিটি করপোরেশনে প্রার্থী চুড়ান্ত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রার্থী পরে ঠিক হবে। জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করে এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে পার্থী চূড়ান্ত করবো।
আলোচনায় নেতারা জানান, সরকার নানা পন্থায় বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দলের কর্মীদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে এবং করবে। অনেক ক্ষেত্রে সিনিয়র নেতাদেরকেও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তাই এসব বিষয়ে খুব সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত রেখে এই আন্দোলনে নতুনত্ব আনার কৌশল নিয়েও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করা হয়। এভাবে ধারাবাহিক পর্যায়ে আন্দোলনকে কঠোর আন্দোলনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে সভা-সমাবেশ করার জন্য প্রশাসনের অনুমতির বাধ্যবাধকতার নিয়ম থেকে ধীরে-ধীরে বের হওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা।
বৈঠকে উপস্থিত সিনিয়র নেতারা সারাদেশে সাংগঠনিক সফরের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। যে সকল নেতাদের জেলা সফরের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাদেরকে অতি স্বত্তর জেলায় সফর করে সাংগঠনিক বিষয়ে এবং জনমত গঠনের কাজ করতে বলা হয়েছে। তা না হলে এর জন্য জবাবদিহীতার আওয়তায় আসতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।
মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার,মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া দলের ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অন্যান্য আরো অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।