বগুড়ায় দিনদুপুরে বন বিভাগের অফিসের ভেতরে ঢুকে পাসপোর্ট অফিসের স্থানীয় সহকারী পারিচালক শাজাহান কবিরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের কৈগাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিজ দপ্তর থেকে বেরিয়ে রিকশা নিয়ে স্থানীয় একটি বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার সময় পেছন থেকে আসা সন্ত্রাসীদের ধাওয়ার মুখে প্রাণ বাঁচাতে তিনি বন বিভাগের অফিসে ঢুকে পড়েছিলেন। গুরুতর আহত পাসপোর্ট কর্মকর্তা শাজাহান কবিরকে প্রথমে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিকেলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়। রামদার আঘাতে তার ডান হাতের কনুইয়ের নিচে, হাঁটু ও মাথায় ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। শজিমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, পাসপোর্ট কর্মকর্তার মাথার আঘাতটি তেমন গুরুতর না হলেও হাত এবং পায়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত।
এর আগে বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোহম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী শজিমেক হাসপাতালে ছুটে যান। তিনি তার চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেন।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা জানান, হামলকারীদের ব্যাপারে কিছু ধারণা পাওয়া গেছে। এখনই আমরা তাদের নাম বলতে চাচ্ছি না। তাদের ধরতে পুলিশ মাঠেও নেমেছে।
প্রায় দেড় বছর আগে বগুড়া আঞ্চলিক অফিসে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েই শাজাহান কবির পাসপোর্ট অফিসকে ‘দালালমুক্ত’ বলে ঘোষণা দেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়।
এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, হামলার ৪৮ ঘণ্টা আগে মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা মোস্তাকিম রহমানের নেতৃত্বে একদল যুবক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সহকারী পরিচালক শাজাহান কবিরের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে লিপ্ত হয়েছিলেন।
পুলিশের গণমাধ্যম শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি আমরাও শুনেছি। তবে ওই ঘটনার সঙ্গে বৃহস্পতিবারের হামলার কোনো যোগসূত্র রয়েছে কি-না সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। কিন্তু অপরাধীদের ধরতে ডিবি, বগুড়া সদর থানা ও শাজাহানপুর থানা পুলিশ একসঙ্গে কাজ করছে।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, ‘আহত পাসপোর্ট কর্মকর্তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমরা তার কথাগুলো পুলিশকে জানিয়েছে। পুলিশ খুব গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করছে।’