জাতীয় স্মৃতিসৌধে দিনভর জনতার ঢল

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ বেদীতে ফুল দিয়ে একাত্তরে আত্মোৎসর্গকারী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে লাখো জনতা। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেদনে ফুলে ফুলে ঢেকে যায় স্মৃতিসৌধের মূল শহীদ বেদী। খবর বাসসের।

মঙ্গলবার ভোর থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসে শিশু-কিশোর-তরুণ-বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ। এসেছিলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারাও। সবার চোখে-মুখে ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা বিনির্মাণের অবিচল আস্থার ছাপ। স্বাধীনতা দিবসের আনন্দ ও উচ্ছাসে স্মৃতিসৌধকে ঘিরে গোটা সাভার যেন পরিণত হয়েছিল উৎসবের নগরীতে।

দিবসের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। সকাল ৬টা ১ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদীতে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও এরপর প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময়ে তারা একাত্তরের শহীদদের স্মরণে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। বিউগলে বাজে করুণ সুর। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল শহীদদের অভিবাদন জানান।

রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো শেষে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে আরেক দফা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। পরে শ্রদ্ধা জানান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, সংসদের স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিচারপতি ও বিদেশি কূটনীতিকরা।

এরপর জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূল ফটকটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। একে একে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিএনপি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রির্পোটার্স ইউনিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর বিভিন্ন হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও এর বিভিন্ন হল, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাসদ, বিএলআরআই, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাপ, বিভিন্ন সরকারি ব্যাংক-বীমা প্রতিষ্ঠান, গনফোরাম, সাম্যবাদী দল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, গনতন্ত্রী পার্টি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, বঙ্গবন্ধু সংসদ, জাসাস, মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলা একাডেমসিহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন একাত্তররে শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।

এদিন র্ধম-র্বণ নির্বিশেষে মানুষ স্মৃতিসৌধে এসছেলি লাল-সবুজ রঙরে পাঞ্জাবি ও শাড়ি পরে। হাত-মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পতাকা এঁকে এসছেলি শিশু-কিশোররা। অনেকে মাথায় পরেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংবলতি শ্লোগান লেখা ব্যান্ড। কেউ কেউ এসেছিলেন স্বপরিবারে।

এদিকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে। স্মৃতিসৌধ ও এর আশপাশের এলাকায়ও কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি র্যাব, পোশাকধারী পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।