‘ব্যাডবয়’ হরভজনের মুখে বাংলাদেশকে নিষিদ্ধের দাবি

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি নিজেই ছিলেন ভীষণ বিতর্কিত। প্রতিপক্ষের সঙ্গে ঝগড়া-ঝাটিতে উস্তাদ। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে স্লেজিং নিয়ে বিখ্যাত ‘মাঙ্কিগেট কেলেঙ্কারি’র অন্যতম নায়ক ভারতের সাবেক অফস্পিনার হরভজন সিংয়ের মুখেও এখন বাংলাদেশকে নিষিদ্ধের দাবি!

যা ঘটে গেছে অনাকাঙ্খিত। নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে মহাগুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভুল করে বসলেন আম্পায়ার। আবেগটা ধরে রাখতে না পেরে ম্যাচ বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কয়েক চোট ঝগড়া হয়েছে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যেও।

এই ঘটনার জেরে ম্যাচ ফির ২৫ ভাগ জরিমানা করা হয় বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আর নুরুল হাসান সোহানকে। তবে একে যথেষ্ট মনে করছেন না ভারতের সাবেক ক্রিকেটার হরভজন সিং, পুরো বাংলাদেশ দলকেই নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন তিনি!

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিতর্কিত ম্যাচটিতে শেষ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিল ১২ রান। ইসুরু উদানা প্রথম দুই বলেই বাউন্সার দেন, এক ওভারে দুই বাউন্সার হলে একটি ‘নো’ বল ডাকার কথা। কিন্তু আম্পায়াররা সেটি করেননি। বরং দ্বিতীয় বলে রানআউট হয়ে যান মোস্তাফিজুর রহমান।

এ সময় বাউন্সার নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে মাঠে থাকা ব্যাটসম্যানদের খেলা রেখে বেরিয়ে আসতে বলেন ক্ষিপ্ত সাকিব। বাংলাদেশ অধিনায়কের কথায় মাঠ ছাড়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন দুই ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর রুবেল হোসেন। দলীয় ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন আর কোচিং স্টাফের অন্য সদস্যদের হস্তক্ষেপে ম্যাচটি শেষ করে আসে বাংলাদেশ এবং সেটা শেষ বলে মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত এক ছয়ে জয় দিয়েই।

ঘটনা সেখানেই শেষ হতে পারতো। সাকিব আল হাসান ম্যাচশেষে তাদের আচরণের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন। কিন্তু ড্রেসিংরুমে উদযাপন করতে গিয়ে আরেকটি ভুল করে বাংলাদেশ। ভেঙে যায় ড্রেসিংরুমের কাচ। টাইগারদের এই আচরণে এখন পেয়ে বসেছে ক্রিকেট বিশ্ব।

ভারতের সাবেক ক্রিকেটার নিখিল চোপড়া বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘এটা স্বাধীনতা কাপ। ভুলে গেলে চলবে না। অধিনায়কে অবশ্যই উচিত ছিল নেতৃত্ব দিয়ে উদাহরণ তৈরি করা।’

ভারতের সাবেক অফস্পিনার হরভজন সিং তো আরও এক ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ দলকে নিষিদ্ধেরই দাবি তুলেছেন। এই ঘটনার পর টাইগাররা অনেক সমর্থক হারিয়েছে, মনে করছেন তিনি, ‘যদিও আমার জীবনে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে, তবু আমি এই ঘটনার কথা বলছি। এটা এমন একটা, যেটার দিকে তাকালে আপনি লজ্জাবোধ করবেন। যা ঘটেছে, তা ক্রিকেটের জন্য দুঃখের। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সম্ভবত অনেকগুলো সমর্থক হারালো।’

বাংলাদেশ দল ড্রেসিংরুমের কাচ ভেঙেছে, সেটাও উল্লেখ করেছেন হরভজন। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই তারা যেটা করেছে, সেটা করা উচিত হয়নি। তারা কিছু ভেঙে ফেলতে পারে না। আম্পায়ারিংয়ে কিছু ভুল ছিল, তবে ম্যাচে এমন হতেই পারে। আপনি খেলোয়াড়দের বেরিয়ে যেতে বলতে পারেন না। তারপর আবার উদযাপন করতে গিয়ে জানালার কাচও ভেঙে দিলেন।’

হরভজন মনে করছেন, এই ঘটনায় সাকিব আর নুরুলকে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে- তা যথেষ্ট নয়। পুরো বাংলাদেশ দলকে নিষিদ্ধের দাবি তুলে ভারতের সাবেক অফস্পিনার বলেন, ‘যা ঘটেছে, ক্রিস ব্রডের (ম্যাচ রেফারি) অবশ্যই সিরিয়াস নোট নেয়া দরকার ছিল। আমি বিস্মিত যে তাদের ম্যাচ ফির মাত্র ২৫ ভাগ জরিমানা করা হয়েছে। আমার মনে হয়, তাদের কয়েক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা উচিত ছিল। পুরো দলকেই নিষিদ্ধ করা উচিত।’