রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকায় একটি ইয়াবা কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। গত বুধবার রাতে থানা এলাকার ঝাওলাহাঠি থেকে ইয়াবা তৈরির মেশিন, কাঁচামাল, রাসায়নিক সামগ্রী, ১২৩ পিস ইয়াবাসহ ব্যবসায়ী ইমু আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে পৃথক অভিযানে র্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এক লাখ ৭১ হাজার পিস ইয়াবাসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে বুধবার ধানমণ্ডি থেকে এক লাখ ২৩ হাজার পিস ইয়াবা, তিন সহযোগীসহ ইয়াবা সম্রাট আলমকে গ্রেফতার করে র্যাব-২। ৪৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দলের হাতে গ্রেফতার হয়েছে আরও চারজন।
পুলিশ জানায়, ঝাওলাহাটির শহিদুল্লাহর বাড়ির ৫ তলায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে ইমু আক্তার ও তার স্বামী আলমগীর ইয়াবা কারখানা গড়ে তুলেছিল। বর্তমানে ইমুর স্বামীসহ তার আরও এক সহযোগী পলাতক। গত রোববার কামরাঙ্গীরচরের মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় , যার শিরোনাম ছিল ‘ইয়াবার ফেরিওয়ালা’। কীাবে দিনেদুপুরে রাস্তায় ইয়াবা বিক্রি হয়, পাইকারি বিক্রেতা কারা এবং তাদের মদদদাতাদের তথ্য উঠে আসে প্রতিবেদনে। দিনেদুপুরে ইয়াবা বিক্রির চিত্র প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ। শুরু করে বিশেষ অভিযান। এক লাখ ২৩ হাজার ইয়াবাসহ র্যাবের হাতে গ্রেফতার-৪ :গাড়ি বেচাকেনার আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা করছিল রাজধানীর পশ্চিম ধানমণ্ডির আলম। সে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার বড় চালান নিয়ে এসে কপবাজারে তার গেস্ট হাউসে রাখত। এর পর সময়-সুযোগ বুঝে আলিশান গাড়িতে সেই চালান নিয়ে আসত ঢাকায়। প্রতি চালানে কমপক্ষে এক লাখ ইয়াবা বহন করত সে। গত বুধবার বিকেলে ধানমণ্ডি থেকে এক লাখ ২৩ হাজার পিস ইয়াবা ও তিন সহযোগীসহ র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় আলম। গ্রেফতার অপর তিনজন হলো- আলমের ছোট ভাই জসিম উদ্দিন, সালাউদ্দিন ও মিজানুর রহমান। তাদের কাছ থেকে ৮১ হাজার টাকা, ৭টি মোবাইল ফোন ও ৩টি ব্যবসার টালি খাতাও জব্দ করা হয়।
গতকাল দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সলেনে এসব তথ্য জানান র্যাব-২ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ার উজ জামান। র্যাব-২ এর অধিনায়ক আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে আলম একটি চালান ঢাকায় আনার পর তার মোবাইল ফোন ও সিমকার্ড পরিবর্তন করত। এছাড়া একই গাড়ি ইয়াবার দুটি চালানের জন্য ব্যবহার করত না। আলম নতুন-পুরাতন গাড়ি বেচাকেনার আড়ালে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা নিয়ে আসত। ছোট ভাই জসিম উদ্দিনকে ধানমণ্ডিতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে দেয়। সেখানে ইয়াবাসেবীদের আসর বসত। সেখান থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা পাইকারি বিক্রি করত তারা। জসিম উদ্দিন ঢাকা কলেজের সমাজবিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
গ্রেফতার হওয়া সালাউদ্দিনের বাড়ি কপবাজারের রামু উপজেলার রাজারপুরে ও মিজানুর রহমানের বাড়ি উখিয়ার পাগলিরবিল এলাকায়। ৪৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ ডিএনসি’র হাতে গ্রেফতার-৪ :মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মহানগর উপ-অঞ্চল ও ঢাকা গোয়েন্দার একটি দল বুধবার ও গতকাল কদমতলীর মুরাদপুর, গুলিস্তান ও খিলগাঁও এলাকা থেকে ৪৮ হাজার ১০০ পিস ইয়াবাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো- জুলহাস তালুকদার, শেখ মো. নজরুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন সিকদার ও তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার।