সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগে কোটার কোনো পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা না গেলে সেসব পদ মেধাতালিকা থেকে পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করে সরকারি কর্মকমিশনসহ (পিএসসি) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানিয়ে দিয়েছে। এ আদেশে জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স ও মিডওয়াইফ পদে এই শিথিলের সুবিধা এককালীন না করে সব সময়ের জন্য প্রযোজ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারি চাকরির নিয়োগে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা আদেশটি দেখে বলছেন, এই সুবিধা কেবল জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স ও মিডওয়াইফ পদের ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে। সব চাকরিতে নয়। আদেশে আমলাতান্ত্রিক ভাষা ব্যবহার করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আন্দোলনকারী ছাত্র বলেন, তাঁরা মনে করছেন, এটা তাঁদের আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়ার একটা কৌশল হতে পারে।
এটি কেবল জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স ও মিডওয়াইফ পদের জন্য শিথিল করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান আজ বুধবার রাতে বলেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে এখন থেকে যেকোনো নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটায় যদি যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া যায়, তখন এটা সবার জন্য প্রযোজ্য হবে।
বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে ৪৫ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়। বাকি ৫৫ শতাংশ অগ্রাধিকার কোটায় নিয়োগ হয়। এই কোটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিভিন্ন সময় চাকরিতে কোটা সংস্কারের জন্য সুপারিশ হলেও তা করা হয় না। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসা ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদ’ পাঁচ দফা সংস্কারের দাবি করছে। সেগুলো হলো কোটাব্যবস্থা ১০ শতাংশে নিয়ে আসা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ পরীক্ষা না নেওয়া, সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা এবং চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা।