কনস্টেবল নিয়োগে ৮০ লাখ টাকার বাণিজ্য, এএসআই গ্রেফতার

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

নারায়ণগঞ্জে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের জন্য কোচিং সেন্টার খুলে ২০ জন চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্ত সেই পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই শাহাবুদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার শাহাবুদ্দিন পুলিশ হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরস্থ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বর্তমানে ঢাকার পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ প্রহরায় ভর্তি রাখা হয়েছে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হলেও শুরু থেকে পুলিশ পুরো বিষয়টি গোপন রাখে। বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি পুলিশের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিশ্চিত করেছে।

সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বাইতুল্লাহ মসজিদের পূর্বপাশে গালাক্সি স্কুলের ভেতরে প্রত্যাশা নামে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষার জন্য কোচিং সেন্টার খুলেন পুলিশের ঢাকার বিশেষ শাখার (এসবি) সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহাবুদ্দিন। পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে চাকরি দেয়ার কথা বলে স্বদেশ, সিয়াম, মোস্তাকিম, রায়হান, তৌহিদ, মারুফা আক্তার মলি, রুবেলসহ ২০ জন সদস্যদের কাছ থেকে চার লাখ করে সর্বমোট ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বাদশা ও ঢাকা এসবির সহকারী উপ-পরিদর্শক শাহাবুদ্দিন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে বিকেল অবধি ফতুল্লার পুলিশ লাইনসের মাঠে প্রথম ধাপে শারীরিক ফিটনেসের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

২৪ ফেব্রুয়ারি শারীরিক পরীক্ষায় অর্থ প্রদানকারী যুবকদের অনেকেই বাদ পড়লে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। এ ঘটনার পরদিন ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে ১৪ জনকে আটক করা হয়। তারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান, এএসআই শাহাবুদ্দিন ও বাদশা তাদেরকে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের কথা বলে প্রথমে কোচিংয়ে ভর্তি করায়। এরপর পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে জনপ্রতি চার লাখ টাকা করে নেয়। তবে প্রথম ধাপে অর্থাৎ শারীরিক ফিটনেস পরীক্ষায় অনেকেই বাদ পড়ে যান। আর এতেই তাদের প্রতারণার বিষয়টি এলাকায় ফাঁস হয়ে যায়।

২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে বন্দর থানায় ঘুষ প্রদানকারী স্বদেশ ভূইয়া বাদী হয়ে দুইজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলেন- ঢাকা রেঞ্জের পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) এবং বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের নিশং এলাকার শাহাবুদ্দিন ও একই এলাকার মোশারফের ছেলে বাদশা।

এদিকে ওই মামলা দায়েরের পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা রেঞ্জের পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহাবুদ্দিন ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে আসার পথে ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকা থেকে গ্রেফতার হন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ রাশেদ মোবারক তাকে গ্রেফতার করেন। বর্তমানে শাহাবুদ্দিন ঢাকা পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুরুষ হাইকেয়ার ইউনিটের ৩য় তলার ১১নং বেডে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান এএসআই শাহাবুদ্দিনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।