কেনিয়া এক সময় বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। খেলেছে বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালও। ২০০৩ বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে উঠে হইচই ফেলে দিয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বে। তার আগে, ১৯৯৬ বিশ্বকাপে ব্রায়ান লারার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে রীতিমত বিস্ময় জুগিয়েছিল আফ্রিকান দেশ কেনিয়া। সবাই ভেবেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ের পর আফ্রিকা থেকে উঠে আসছে আরও একটি পরাশক্তি- কেনিয়া।
কিন্তু সেই কেনিয়া ধীরে ধীরে হারিয়ে গেলো পাদপ্রদীপের আলো থেকে। সেই কেনিয়ায় ক্রিকেট এখন চলছে ধুঁকে ধুঁকে। মিটি মিটি করে জ্বলছে ক্রিকেট আলো। যেন এক ফুৎকারে নিভে যাবে। তবে পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে কেনিয়া থেকে ক্রিকেট পুরোপুরি বিলিন হয়ে যাওয়ার পথে।
আইসিসি নির্ধারিত সহযোগি দেশগুলোর জন্য ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগ ডিভিশন টু-এ খেলে কেনিয়া। নামিবিয়ায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি আফ্রিকার এক সময় প্রচুর সম্ভাবনাময়ী দেশটি। সে কারণে দেশে ফিরেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির অধিনায়ক রাকেপ প্যাটেল।
ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে অধিনায়কের পদত্যাগের পরই নিজের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন কোচ থমাস ওদোয়ো। কেনিয়ার সোনালি সময়ের দারুণ এক বোলার ছিলেন ওদোয়ো। অধিনায়ক এবং কোচের এহেন সিদ্ধান্তের পর আর নিজেকে প্রেসিডেন্ট পদে সমাসিন রাখার কোনো যৌক্তিকতাও খুঁজে পেলেন না কেনিয়া ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট জ্যাকি জান মোহাম্মদ।
ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগের ডিভিশন টু-এ খেলা ৬ দলের মধ্যে কেনিয়া শেষ করেছে ৬ষ্ঠ দল হিসেবে। যে কারণে তারা নেমে গেছে ডিভিশন থ্রি-তে। টুর্নামেন্টে আরব আমিরাতের কাছে ২১৮ রানের বিশাল ব্যবধানেও হেরেছিল কেনিয়া। যা ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের রেকর্ড।
থমাস ওদোয়ো, কেনিয়ার হয়ে বিশ্বকাপ খেলা এই ক্রিকেটার মানসিকভাবে পুরোপুরি বিপর্যস্ত। তিনি বলেন, ‘নামিবিয়ায় আমরা এক সপ্তাহ থেকেছি পুরোপুরি মানসিক বিধ্বস্ত অবস্থায়। এটা খুবই দুঃখজনক। এবং আমার মনে হয়, আর কেউ চাইবে না এই দলটিকে এগিয়ে নিতে, যেটা আমি চেয়েছিলাম। আমরা বাজে পারফরম্যান্সের সবচেয়ে বাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। কেনিয়ার এই অবস্থার উন্নতির জন্য অবশ্যই আমাদেরকে একটি হাই পারফরম্যান্স সেন্টার স্থাপন করতে হবে। না হয়, এখান থেকে উত্তরণের কোনো উপায়ই আর খোলা নেই আমাদের সামনে।’