কোমায় থাকা স্ত্রীকে নিয়েই ৫০ তম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

ভালোবাসার জন্য আমরা কত কিছুই না করি। পৃথিবীর বুকে নিজেদের ভালোবাসার এক টুকরো নিদর্শন রাখতে গিয়ে শাহজাহান তো তাজমহলই বানিয়ে ফেললেন। তবে চীনের জ্যু তার স্ত্রী’র প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশে যা করলেন তাতে হয়তো ছাড়িয়ে গেলেন শাহজাহানকেও।

বিগত তিন বছর ধরে কোমায় থাকা স্ত্রী’কে সাথে নিয়েই উদযাপন করলেন নিজেদের বৈবাহিক জীবনের ৫০ তম বার্ষিক। গোল্ডেন জুবিলী বা সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের এই পুরোটা সময়েই অচেতন ছিলেন জ্যু’র স্ত্রী। তবে তাতে উদযাপনে কোন কমতি পড়েনি।

৫০ তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপনে ছিল সহধর্মিণীর পছন্দের স্বাদের কেক, বেলুন দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হাসপাতালের কক্ষ আর নিজেদের বিয়ের সময়ের আংটি। সাথে ছিল জ্যু’র স্ত্রী চিকিৎসায় নিয়োজিত ডাক্তার ও সেবিকারা। এসময় পুরো হাসপাতাল জুড়েই এক আবেগঘন মুহুর্তের সৃষ্টি হয়।

অনেক চেষ্টা করেও অনেকেই ধরে রাখতে পারেননি চোখের অশ্রু। আর এই ঘটনাটি প্রযুক্তির কল্যাণে ইতোমধ্যে ভাইরাল। ডিজিটাল মাধ্যমে এ ঘটনার সাক্ষী অনেকেও হয়েছেন অশ্রুসিক্ত। আবেগাপ্লুত সেসব মতামত জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও।

৭৯ বছর বয়সী জ্যু’র বরাত দিয়ে চীনের গণমাধ্যম পিপলস ডেইলী জানায়, ৩ বছর আগে মস্তিষ্কের রক্তরক্ষণে অসুস্থ হয়ে কোমায় যান ৭৫ বছর বয়সী তার স্ত্রী। কিন্তু এর আগে সুস্থ থাকা অবস্থায় দুই জন মিলে একসাথে ৫০ তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপনের পরিকল্পনা করেছিলেন এই দম্পতি। স্ত্রীর প্রতি করা সেই প্রতিশ্রুতি ঠিকই রক্ষা করলেন জ্যু।

শুধু তাই নয় , হাসপাতাল সূত্র মতে, বিগত তিন বছরের তিন দিন বাদে অচেতন স্ত্রী’র পাশেই ছিলেন জ্যু। যে তিন দিন তিনি আসতে পারেননি হাসপাতালে সেই দিনগুলোতে নিজেও অসুস্থ ছিলেন বৃদ্ধ জ্যু।

গণমাধ্যমটিকে নিজেদের সম্পূর্ণ পরিচয় না দিয়ে জ্যু বলেন, “যতদিন পর্যন্ত আমার স্ত্রীর চেতনা ফিরে আসার ক্ষীণতম সম্ভাবনা থাকবে ততদিন পর্যন্ত আমি হাল ছাড়ব না”।

বাহ! এমনই তো হওয়া উচিত ভালোবাসা। বেঁচে থাকুক পৃথিবীর সকল ভালোবাসা।

সূত্রঃ পিপলস ডেইলি