অনলাইন টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম করতে যাচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

লেখক:
প্রকাশ: ১৪ ঘন্টা আগে

শুধু ঈদের সময় নয়, আগামী দিনে কখনোই বাস, রেল ও বিমানযাত্রায় কোনো ধরনের অনিয়ম যাতে না হয় সেজন্য সরকার একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি জানান, যেখানে একই প্ল্যাটফর্ম থেকেই যাত্রীরা খুব সহজেই বাস, ট্রেন ও ফ্লাইটের টিকেট ক্রয় করতে পারবেন।

 

শুক্রবার (৬ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।

ওই ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একইরকমভাবে সব ধরনের সরকারি সেবা যাতে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায় সেজন্য ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’ এই নামে একটি সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে। দেশের সর্বত্র-শহরে, হাট-বাজারে তরুণ-তরুণীদের মাধ্যমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সার্ভিস সেন্টার স্থাপনের কাজ শুরু করেছি। এটি ঢাকা শহরে কয়েকটি সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে শুরু হয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ঈদ-উল-ফিতরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘমেয়াদে বাজারের জিনিসপত্রের দাম স্থিতিশীল রাখতে আমরা তৎপর হয়েছি। এবার কোরবানির ঈদেও কোনো জিনিসের দাম যাতে আকস্মিকভাবে বেড়ে না যায় সেদিকে আমরা সর্বোচ্চ নজর দিয়েছি। ফলে এবার আলু, পেঁয়াজ, ডিম, চিনি, শাকসবজি-তরিতরকারি ও মসলাসহ অধিকাংশ পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় কমেছে। আমরা সার্বিক বাজার ব্যবস্থাকে দুর্বৃত্তদের চক্র থেকে বের করে এনে বাজারে একটা প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছি। জনগণকে নায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দিতে সরকারের সবরকমের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এই কোরবানির ঈদেও দেশবাসী যাতে নির্বিঘ্নে নিজেদের দেশের বাড়িতে যাতায়াত করতে পারেন সেজন্য সরকার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় সজাগ রয়েছেন, ঈদের ছুটির মধ্যেও বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। আমি আপনাদের প্রতি আন্তরিক। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্থানীয় তরুণ উদ্যোক্তারা নাগরিক সেবা কেন্দ্র থেকে সাধারণ নাগরিকদের এনআইডি, পাসপোর্ট, লাইসেন্স, পুলিশের কাছে জিডি করা, কর ফাইলিং করাসহ বিভিন্ন সরকারি ডিজিটাল সেবা দেবেন। এর ফলে দালাল চক্রের খপ্পর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, নানা রকম হয়রানি ও ভোগান্তি কমবে বলে আমরা আশাবাদী। এই প্রজেক্ট শূন্য বাজেটে আমরা শুরু করেছি। দেশের বিদ্যমান অব্যবহৃত সম্পদ ব্যবহার করেই সামনে এগিয়ে চলা সম্ভব- এটাই আমরা বাস্তবে করে দেখার চেষ্টা করছি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমাদের চেষ্টা হচ্ছে প্রতিটি মন্ত্রণালয় থেকে যতগুলো সেবা এর আওতায় আনা যায় সবগুলোকে নিয়ে আসা। আমরা চেষ্টা করছি যাতে শিশু জন্মগ্রহণ করা মাত্রই তার জন্মসনদ পেয়ে যায়। ওটাই হবে তার নাগরিক স্বীকৃতি এবং রাষ্ট্র কর্তৃক তার দায়িত্ব গ্রহণের অঙ্গীকার। ওখান থেকেই যাবতীয় সকল সনদ সে তার নাগরিক অধিকার হিসেবে ক্রমাগতভাবে সম্মানের সঙ্গে পেতে থাকবে। এক অফিস থেকে আরেক অফিসে তার দৌঁড়াতে হবে না। দালালের পেছনে মাসের পর মাস ঘুরতে হবে না।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বিদেশ সফরে গেলে সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রায়ই আমাদেরকে সরকারি সেবা পেতে নানারকম দুর্ভোগের কথা জানান। প্রবাসীদের জন্যও বিদেশে তাদের নিজ নিজ শহরে আমরা বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত নাগরিক সেবাকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছি। সেখান থেকেই তারা পাসপোর্ট নবায়ন, জাতীয় পরিচয়পত্র ইত্যাদি সংগ্রহ করতে পারবেন।

তিনি বলেন, এগুলি কঠিন কাজ। এগুলোকে কঠিন করা হয়েছে। কিন্তু এখন সরকারের অভ্যন্তরে সাহসী ও উদ্যোগী সিনিয়র সচিব, সচিব এবং ডিজিদের সহযোগিতায় অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকালে আমরা এটা সমাপ্ত করতে বদ্ধপরিকর।